দ্যা উইসডম অব ইনসিকিউরিটি

কোন বোধগম্য জিনিসই ফিক্সড না। এইটা একটা সিম্পল উইসডম। যে কেউ যে কোন জিনিসের উপর একটু মনযোগ দিলেই সেইটা বুইঝা ফেলার কথা। কিন্তু এই উইসডম যতই সিম্পল হউক না কেন, অলমোস্ট এনটায়ার হিউম্যান রেস এই এক জায়গায় আইসা নিজের জন্যই নিজে সমস্যা বাধায়।

ব্যাপারটা কেমন?

ব্যাপারটা কেমন তা আপনে ইতিমধ্যেই জানেন। আমিও জানি। আপনি আর আমি, অর্থাৎ আমরা জানি যে এই ধরায় কখনই কোন কিছু এক জায়গায় স্থির হইয়া দাঁড়াইয়া থাকে না, থাকে নাই, থাকবেও না। এমনকি শত বছরের পুরানা কোন দালানও স্থির থাকে না। তারে আপাত দৃষ্টিতে স্থির মনে হইলেও সে আসলে প্রতি মুহূর্তে ক্ষয়ের দিকে আগাইতে থাকে, সেইটা যত ধীরেই হউক না কেন সেইটা অবশ্যই একটা অস্থিরতা, পরিবর্তন, এবং গতি। কিন্তু অদ্ভুদ ব্যাপার হইল এই ব্যাপারটা আপনি-আমি এত ভালো কইরা জানলেও, এই জ্ঞান আমাদের আচরণে কিছুতেই প্রতিফলিত হয় না।

অতএব, ব্যাপারটা কেমন সেই প্রশ্ন থাইকা এখন ব্যাপারটা আসলে এমন কেন এই প্রশ্নটাই জরুরী হইয়া উঠে।

তো প্রশ্নটা হইল, ব্যাপারটা কেন এমন?

হিউম্যান মাইন্ড হইল হিউম্যান রেসের সবচাইতে দামি, সফিসটিকেটেড, এবং কমপ্লিকেটেড একটা টুল। এই টুলটা এতটাই শক্তিশালী যে মানুষ প্রায় সব সময়ই ভুইলা যায় যে এইটা একটা টুল। সে মনে করে এইটাই সে, অর্থাৎ মাইন্ড মানুষরে বলে যে মানুষ মাইন্ড বৈ আর কিছুই নয়। যাইহোক, মাইন্ড নামক মানুষের এই টুলটা প্রতি মুহূর্তেই বিবর্তিত হয়। এবং এইটার বিবর্তন নির্ভর করে হিউম্যান বডির সারভাইবালের উপরে। অর্থাৎ নতুন নতুন পরিস্থিতিতে, সেইটা যত কঠিনই হউক না কেন, বডিরে সারভাইব করানোর জন্য মাইন্ড বিবর্তিত হইতে থাকে। এই সারভাইবালের জন্য মাইন্ড যা কিছুই করে, যত ধরণের ইমোশন তৈরি করে, সেইটারে আমরা বলি সাইকোলজি। তবে এই মাইন্ডের ভিতরে যত জটিল ঘটনা ঘটে সেইসবের পেছনে একটাই ধান্ধা – সেইটা হইল সারভাইবাল। দুঃখজনক ভাবে সত্য হইল, এইটা ছাড়া এইখানে আর কোন মহৎ কিংবা পবিত্র উদ্দেশ্য নাই।

তো এই সারভাইবালের জন্য মাইন্ড যা কিছু কইরা যায় তাঁর মধ্যে প্রধান হইল সবকিছুর মধ্যে একটা ফিক্সড প্যাটার্ন খুইজা বাহির করা। এবং মজার বিষয় হইল অলমোস্ট সব কিছুতেই খুঁজলে নির্দিষ্ট প্যাটার্ন পাওয়া যায়। (যেমন আপনি একটু খুঁজলেই প্রকৃতির বিভিন্ন জিনিসের মধ্যে ঈশ্বরের নামের আকৃতি দেখতে পাইবেন, আবার ফুলের পাপড়িতে আপনে মেয়েদের ভ্যাজাইনার আকৃতিও দেখতে পাইবেন।) তবে সব প্যাটার্নই অস্থায়ী। প্যাটার্ন ধরার এই টেনডেন্সি থাইকা আমাদের মাইন্ড ‘মরালীটি’ অর্থাৎ নৈতিকতা নামক একটা জিনিস আবিস্কার করছে, যেইখানে এই মরালীটির সারভাইবাল পুরাটাই নির্ভর করে Fixity (স্থিরতা) এর উপরে।

মিলিয়ন বছর ধইরা এই প্যাটার্ন খোঁজার গভীর চর্চার ফলে আমরা এখন আর পরিবর্তন মাইনা নিতে পারি না। এবং এর ফলে, Intelligible (বোধগম্য) রে ফিক্সডের সাথে কনফিউজ কইরা ফেলাটা আমাদের স্বভাব হইয়া উঠছে। যা কিছু ফিক্সড না তা যেন আমাদের বোধের ভিতরে কিছুতেই আঁটে না।

আমরা মনে করি লাইফের যে ঘটনার প্রবাহ আছে সেইটারে যদি একটা রিজিড ফর্মের ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে ফিট করানো না যায় তাইলে লাইফের কোন মিনিং দাঁড়ায় না। এবং এই মিনিং না দাঁড়ানোটা মরাল এনিম্যাল ‘মানুষ’ এর জন্য খুবই হতাশাজনক। সুতরাং মিনিংফুল হইতে হইলে জীবনরে অবশ্যই কিছু ফিক্সড আইডিয়া এবং নিয়মকানুনের মধ্যে ফিট হইতে হবে। ফিট না হইলে জীবনের তাৎপর্য আমরা কিছুতেই ধরতে পারি না! এইটা একটা টেরিফায়িং ব্যাপার!

যদি আমাদের সাবজেকটিভ আইডিয়া আর নিয়মকানুনের মধ্যে ফিক্সড কইরাই জীবনরে বোধগম্য করতে হয়, তাইলে বলা যায় আমরা একটা Constant Flux (চলমান প্রবাহ) এর মধ্য থাইকা Fixity (স্থিরতা) বাহির করার অসম্ভব এক কর্মযজ্ঞে লিপ্ত হইয়া আছি।

এই মরালীটি আপাত দৃষ্টিতে দেখতে বড়ই সুন্দর। জীবনরে শৃঙ্খলের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে হইলে এইটার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। কিন্তু এইখানে এইটা বোঝা খুবই জরুরী যে অস্থায়ী প্যাটার্ন আর Fixity (স্থিরতা) দরকার কেবল সারভাইবালের জন্য। এবং হিউম্যান কনশাসনেস শুধু এই সারভাইবালেই আটকাইয়া থাকে না। কনশাসনেসের সবগুলা ডাইমেনশনরে আবিস্কার কইরা ফুল ফ্লেজে জীবনরে যাপন করতে হইলে মানুষরে অবশ্যই মরালীটি থাইকা মুক্ত হইতে হবে।

তাইলে কি মরালীটি কুৎসিত?

হ্যাঁ, হিউম্যান কনশাসনেসের বিশালতার কাছে এইটা খুবই নিচু মানের একটা জিনিস।

কেন?

কারণ, মরালীটির উপর ভিত্তি কইরা যেসব মানব সম্পর্ক তৈরি হয় সেগুলোর চাইতে বেশী অমানুষিক আর কিছুই হইতে পারে না। যখন একজন ব্যক্তি ক্ষুধার্তের মুখে রুটি তুইলা দেয় দয়াশীল হওয়ার জন্য, কোন নর/নারীর সাথে বাস করে বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য, কোন নিগ্রোর সাথে বইসা এক পাতে খানা খায় নিজের বর্ণবাদীতা নাকচ করার জন্য, এবং খুন-খারাবী থাইকা দূরে থাকে শান্তি বজায় রাখার জন্য, সেই ব্যক্তির হৃদপিণ্ড আসলে ঝিনুকের শেলের মতই নিথর, নিষ্ঠুর, আর শীতল। সে আসলে কখনই অপর ব্যক্তিটারে ঠিকমত দেখে না। শুধু নৈতিকতারেই দেখে। তাঁর এই দেখানো বদান্যতা হইলো করুণা থাইকা নির্গত হওয়া হালকা একটু লঙ্কার ঝাল, সে অন্যের দুর্দশা দূর করতে চায় কেবলমাত্র দুর্দশার দৃশ্যটায় সে ডিজগাস্ট ফিল করে সেইজন্যে। এবং নৈতিকতার এই পুরো ব্যপারটায় সবচাইতে অমানবিক ব্যাপার হইলো এইখানে সেন্স অব ইনক্লুসিভনেসের ছিটেফোঁটাও থাকে না।

এত জঘন্য হওয়ার পরেও হিউম্যান মাইন্ড কেন এইরকম একটা জিনিসের চর্চা কইরা যায়?

এর কারণ, ঐ সারভাইবালই। সারভাইবালের জন্য সবকিছুরই এক ধরণের নিরাপত্তার দরকার হয়, আর নিরাপত্তা আসে শৃঙ্খলা থাইকা, এবং শৃঙ্খলার জন্যে দরকার হয় মরালীটি। এইটা একটা সার্কেল।

শুধু সবকিছুতেই নিরাপত্তা অথবা স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য আমরা আমাদের পুরা জীবনটারেই উৎসর্গ কইরা দেই। কিন্তু অস্তিত্বে কোন কিছুই যে স্থায়ী না সেই উইসডমটা আমাদের সারভাইবালের উৎকণ্ঠার নিচে চাপা পইড়া বেহুঁশ হইয়া থাকে মিলেনিয়ার পর মিলেনিয়া।

শরিফুল ইসলাম
মার্চ ০৩, ২০১৮, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *