ভালোবাসার চৌদ্দ লাইন

তোমায় ভালোবাসি না এই ভেবে যেন তুমি একটা নোনতা-গোলাপ, পোখরাজ কিংবা পুষ্প তীর যা আগ্নি ছড়ায়ঃ তোমায় ভালোবাসি ঠিক যেমন কেউ ভালোবাসে নির্দিষ্ট কিছু আবছা জিনিসকে, গোপনে, ছায়া আর আত্মার মাঝখানে। তোমায় ভালোবাসি গাছের মত, যে গাছ ফুল ফোটায় না কিন্তু বয়ে বেড়ায় ফুলের রঙ, লুকানো, নিজের ভেতর, এবং ধন্যবাদ তোমার ভালোবাসাকে, যার প্রখর সৌরভ […]

তোমার পা

যখন তোমার মুখের দিকে চাইতে পারি না, চোখ রাখি তোমার পায়ে। তোমার বাঁকা হাড়ের পা, তোমার শক্ত ছোট্ট পা। জানি পা দুটো তোমার আলম্বন, তাঁরা বয়ে বেড়ায় তোমার শরীরের মিষ্টি ওজনের ভার। তোমার কটিদেশ, তোমার বক্ষদ্বয়, তোমার স্তনাগ্রের দ্বিগুণিত রক্তবর্ণ। তোমার চোখের কোটরদ্বয় যারা এইমাত্র উড়ে চলে গেল, তোমার প্রশস্ত ফলময় মুখ, তোমার লাল বেণী, […]

তোমার হাসি

কেড়ে নাও আমার মুখের রুটি, যদি তুমি চাও কেড়ে নাও নিঃশ্বাসটুকুও, কিন্তু কেড়ে নিও না তোমার হাসিটা আমার কাছ থেকে। কেড়ে নিও না গোলাপটা, তোমার নিজ হাতে তোলা কণ্টকময় ফুলটা, কেড়ে নিও না হঠাৎ আনন্দে ফেটে পড়া জলরাশি, তোমার ভেতর জন্ম নেয়া রূপোর হঠাৎ তরঙ্গ। আমার কঠোর পরিশ্রম, আমি ঘরে ফিরি শ্রান্ত চোখে, যে চোখ […]

সে সৌন্দর্যের বুকে হেঁটে বেড়ায়

সে সৌন্দর্যের বুকে হেঁটে বেড়ায়, ঠিক মেঘহীন তারা ভরা আকাশের রাতের মতই। অন্ধকার আর আলোর উত্তম অংশটুকু মিশে যায় তার চোখে, তার দৃষ্টিভঙ্গিতে। এভাবেই সে গলে যায় কচি আলোয় যা স্বর্গীয় ঝকঝকে দিনকেও অস্বীকার করে। তার মুখে আলো-ছায়ার খেলা চলে, ভারসাম্যের। যা দোলা দেয় প্রতিটা দাঁড়কাকের বেণীতে, অথবা আলোর আলতো ছোঁয়া লাগে তার চেহারায়, যেখানে […]

আমি পর্বতটাই বেছে নেই

নিম্ন ভূমিরা আমায় ডাকে সাড়া দিতে আমি উতলা তাঁরা আমায় বিনামূল্যে বাসস্থানের প্রস্তাব দেয়, বিনাশ্রমে। ওদিকে সুবিশাল পর্বতটি নড়েচড়ে উঠে আঙ্গুলের ইশারায় আহবান জানায়, আরোহণের পিচ্ছিল মোড় গুলো বেয়ে উপরে উঠাটা কঠিনতর! আমি দুটি পথ একসাথে বেছে নিতে পারি না সামনে আমার একটি পথই খোলা আমাকে দিতে হবে বিজ্ঞতার পরিচয় এটাই নির্ধারণ করবে আমার ভাগ্য […]

নারীকে ভালোবাসা যায়, বোঝা যায় না

অশোরে একবার বলা হইছিল, আপনেই হইলেন এই ধরায় প্রথম পুরুষ যে নারীদেরকে পুরোপুরি বুঝতে পারছে এবং গ্রহণ কইরা নিতে পারছে। দয়া কইরা নারীদের ব্যপারে কিছু বলেন। অশো বলছিল— একজন নারীকে ভালোবাসা যায়, বোঝা যায় না। এই ব্যপারটা আপনারে প্রথমে বুঝতে হইব। জীবন এতটাই রহস্যজনক যে আমাদের হাত এইটার চুড়ায় কখনই পৌঁছাইতে পারে না, আমাদের চোখ […]

প্লবতা

প্রেম এসে নিয়ে গেছে আমার সকল কর্ম, সকল বাস্তবতা, বিনিময়ে আমাকে ভরিয়ে দিয়ে গেছে কাব্যকলায়। আমি বারবার চেষ্টা করেছি চুপ থাকার অন্য কারো জোরে নয়, শুধু তোমার জোরে, কিন্তু পারিনি। আমি বাধ্য হয়েছি হাততালি দিতে, গেয়ে উঠতে। আমি ছিলাম শ্রদ্ধাভাজন, সৎ এবং স্থির, কিন্তু এমন জোরালো বাতাসের মুখে দাঁড়িয়ে কে মনে রাখতে পারে এইসব কথা? […]

সু-প্রভাত

আচ্ছা, কেমন ছিলাম তুমি আর আমি সাক্ষাতের আগে, ভালোবাসার আগে? আমরা কি তখন পর্যন্ত দুগ্ধপোষ্য ছিলাম? নাকি ডুবে ছিলাম শিশুবৎসল গ্রাম্য সেই আদিম আনন্দে? নাকি শত বছর ধরে নাক ডাকছিলাম ‘ঘুমন্ত সাত’ এর গুহায়? হয়তো তাই হবে; কিন্তু এইসব, সকল সুখানুভূতিই যে কল্পনাবিলাস! যদি কখনও আকাঙ্ক্ষিত কোন সৌন্দর্য আমি দেখে থাকি, এবং পেয়ে থাকি, তা […]

অতএব, তুমি

তুমি আমার মতই, তুমিও মরে যাবে, কিন্তু আজ নয়ঃ তুমি, অতুলনীয়, বেখাপ্পা, অতএব সময়েরা জ্বলে উঠেঃ যদি তোমায় আমি বলি, “তোমাকেই আমি বলি”, তুমি কোন সুর নও, অথবা কোন ভূতুড়ে রেডিওর সরাসরি সম্প্রচার নও, কখনো কোন তৈলচিত্রও ছিলে না, অথবা কোন বিজ্ঞ মাস্টারের কয়লায় আঁকা স্কেচও নওঃ তুমি হলে একটা মনুষ্য ছন্দ, সংখ্যা, কণ্ঠ, এবং […]

দুই মাথাওয়ালা কবিতা

বল “মৃত্যু” এবং পুরো ঘরখানা জমে যাবে— এমনকি আসবাবপত্রগুলো নড়াচড়া বন্ধ করে দিবে, এমনকি বাতিগুলোও। যেন একটা কাঠবিড়ালি হঠাৎ তাঁর উপর নিবদ্ধ কোন দৃষ্টির অস্তিত্ব টের পেল। বল “চলমান”, সবকিছুই নড়েচড়ে উঠবে, ছুটবে সম্মুখ পানে, তোমার জীবন পুরনো ফিল্মের অমসৃণ পৃষ্ঠতলকে তুলে নিয়ে চলতে থাকবে। এটা জপতে থাকো, মুখে ধরে রাখো মুহূর্তের পর মুহূর্ত, দেখবে […]