সেদিনও বৃষ্টি হচ্ছিলো—আজকের মতই। জানালার বাইরে, একইভাবে অশ্বথ গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে সিক্ত হয়ে চিকচিক করছিলো—যেমনটা করছে আজকেও। সেগুন কাঠের সেই খাটটায়, যেটাকে এখন জানালা থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে আনা হয়েছে, সেখানে রান্ধিরের গায়ে নাক চাপা দিয়ে শুয়ে ছিলো একটা মারাঠি মেয়ে। জানালার বাইরে, অশ্বথ গাছের পাতাগুলো লম্বা কানের দুলের মত ধিকিধিকি কাঁপছিলো রাতের ধূসর […]
Tag: Translation
ব্লাউজ
মমিন গত কয়েকদিন যাবত এক ধরণের অস্থিরতায় ভুগছে। তাঁর পুরো শরীরটা যেন একটা দগদগে বিষফোঁড়া। সর্বদা সে একটা রহস্যজনক ব্যথা অনুভব করে —কাজ করতে গেলে, হাঁটতে গেলে, এমনকি চিন্তা করতে গেলেও ব্যথাটা তাঁর অনুভূত হয়। যতবারই সে এই অনুভূতিটাকে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছে, ততবারই ব্যর্থ হয়েছে। বসে থাকা অবস্থায় মাঝে মাঝে সে ব্যথাটার একটা ব্যাখ্যা দাঁড় […]
প্রতিধ্বনি
আমি জানি আমি গুপ্তধন খুজছিলাম পুকুরের স্বচ্ছ জলে যখন তোমার মুখ… যখন তোমার মুখটি যেন কুয়োয় প্রতিফলিত চাঁদ। যেখানে আমার ইচ্ছে… যেখানে খুব ইচ্ছে পুষি তোমার চুমুর হিমশীতল অগ্নি ছোঁয়ার শুধু আমার ঠোঁটের জলে যেখানে তোমার মুখ… যেখানে তোমার মুখের ছবির প্রতিফলন হয়, প্রাণবন্ত! ঠিক সেখানে নয়, যখন আমি পেছন ফিরে দেখি শূন্য হাওয়া। সেই […]
তোমাকে ভালোবাসার আগে
তোমাকে ভালোবাসার আগে, প্রিয়া, কিছুই ছিলো না আমারঃ আমি ঘুরে বেরিয়েছি রাস্তায়, জিনিসপত্রের মাঝখানেঃ সবই ছিলো অর্থহীন অথবা নামহীনঃ পুরো পৃথিবীটা ছিলো ফাঁকা, অপেক্ষারত। আমি দেখেছি ছাইয়ে ঠাসা ঘরগুলো, দেখেছি সুড়ঙ্গের সারিগুলো যেখানে ছিলো চাঁদের আবাস, দেখেছি অভব্য গুদাম ঘর, যে ঘর গোস গোস করে বলে উঠে “বের হও”, দেখেছি বালির মধ্যে প্রশ্নের জোরাজুরি। সবকিছুই […]
রানী
আমি তোমার নাম দিয়েছি রানী। তোমার চেয়েও দীর্ঘদেহী কেউ আছে, আরও দীর্ঘ। তোমার চেয়েও বিশুদ্ধ কেউ আছে, আরও বিশুদ্ধ। তোমার চেয়েও প্রাণবন্ত কেউ আছে, আরও প্রাণবন্ত। কিন্তু তুমিই রানী। যখন তুমি হেঁটে বেড়াও রাস্তাগুলোতে কেউ চিনতে পারে না তোমাকে। দেখতে পায় না কেউ তোমার মাথার স্বচ্ছ মুকুট, চোখ পড়ে না কারো তোমার পায়ের তলায় দলিত […]
অ্যামোর
এতগুলো দিন, আহ! এতগুলো দিন এতটা কাছে, এতটা স্পষ্ট করে দেখেছি তোমায় কি করে শোধবো এই ঋণ, কি দিয়ে শোধবো, বলো? কুঞ্জবনে জেগে উঠেছে রক্ত পিপাসু বসন্তটা। শৃগালেরা ছেড়েছে তাঁদের ধরাধাম, সর্পরা আকণ্ঠ পান করেছে শিশির বিন্দু, আর আমি, দেবদারু আর নীরবতার মাঝখানে তোমার সাথে ঘুরে বেড়াই পাতায় পাতায়, নিজেকে সুধাই, কখন এবং কিভাবে তোমাকে […]
সবার সাথে একা
মাংস পিণ্ডটা আচ্ছাদিত করে কঙ্কালটাকে আর তাঁরা সেখানে জুরে দেয় একটা মন কখনও কখনও একটা আত্মা, মহিলাটা ফুলদানিগুলো ছুড়ে মারে দেয়ালে, ভেঙ্গে চুরমার লোকটা মদ গেলে খুব এবং কেউই খুঁজে পায় না একজনকে কিন্তু খুঁজতে থাকে সবাই হামাগুড়ি দিয়ে উঠে, নেমে বিছানা থেকে। মাংস আচ্ছাদিত করে কঙ্কালটাকে, আর মাংস খুঁজে বেড়ায় মাংসের চাইতেও বেশী কিছু। […]
আমার পেছনে ডুব দেয় অনন্তকাল
আমার পেছনে — ডুব দেয় অনন্তকাল— আমার সম্মুখে — অমরত্ব— আর আমি — এ দুয়ের মধ্যিখানে— মৃত্যু হল পুবাকাশের ধূসর প্রবাহমান বাতাস, মিশে যায় ভোরের নরম আলোয়, পশ্চিমে দিন শুরুর আগেই— এটা রাজত্ব — অতঃপর — তাঁরা বলে— নিখুঁত — বিরতিহীন রাজতন্ত্র— যার রাজপুত্র — অমানবের ছেলে— সে— তাঁর অন্তহীন বংশ পরম্পরা— সে — বৈচিত্রপূর্ণ […]
দূরে যাইও না
দূরে যাইও না, একদিনের জন্যেও না, কারণ— কারণ — ক্যামনে বলিঃ একটা দিন যে অনেক লম্বা আমি অপেক্ষা করতে থাকব তোমার জন্যে, যেন একটা শূন্য ষ্টেশনে যখন ট্রেনগুলা এক কোনায় পইড়া থাকে, ঘুমে বিভোর। আমারে ছাইড়ো না, এক ঘণ্টার জন্যেও না, কারণ তখন যন্ত্রণার ছোট ছোট ফোঁটাগুলা এক হইয়া দৌড়াবে, ঘরের খোঁজে কাতর এদিক-ওদিক ঘুইরা […]
আমি কেহ নই! তুমি কে?
আমি কেহ নই! তুমি কে? তুমিও কি আমার মতই কেহ নও? তাহলে তো আমরা এখন দু’জন — কাউকে বলো না কিন্তু! শুনতে পেলে তাঁরা ডাক ঢোল পেটাবে — জানো তো! আহ! কি ক্লান্তিকর কেহ হওয়াটা! কতটা লৌকিক! একটা ব্যাঙের মত সারাটা দিন প্রশংসায় পঞ্চমুখ সোঁদা মাটির দিকে তাকিয়ে নির্লজ্জের মত নিজের নাম আওড়ানো ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, […]