কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (পঞ্চমাংশ)

আহ ঘুম! একটা প্রশান্তির জিনিস, উত্তর থেকে দক্ষিণ মেরু, সবাই তাঁকে ভালোবাসে! সকল প্রশংসা ঐ মেরি কুইনের জন্যে! সেই তো স্বর্গ থেকে পাঠিয়েছে এমন প্রশান্তির ঘুম, যে ঘুম পিছলে ঢুকে পড়েছে আমার আত্মার অভ্যন্তরে। ডেকের উপর খালি পাত্র গুলো, অনেকক্ষণ ধরে এমনিই পড়ে ছিলো, স্বপ্নে দেখলাম, পাত্র গুলো শিশির জলে ভরে গিয়েছিলো; যখন জেগে উঠলাম, […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (চতুর্থাংশ)

‘তোমাকে আমার ভয় করে, বুড়ো নাবিক! ভয় করে তোমার ঐ হাড্ডিসার হাত! তোমার সরু, ক্ষীণ আর বাদামী দেহ ঠিক যেন সাগরের বুকে ভেসে উঠা সরু চর। তোমাকে আমার ভয় করে, ভয় করে তোমার চকচকে চোখ, তোমার হাড্ডিসার অতি বাদামী হাত।’— ভয় নেই, ভয় পেওনা, হে বিয়ের-অতিথি এ দেহটা এখনো দাঁড়িয়ে আছে। একা, একা, একেবারে, একদম […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (তৃতীয়াংশ)

একটা ক্লান্ত সময় পার হচ্ছিলো। প্রতিটা কণ্ঠনালী শুকিয়ে হয়েছিলো কাঠ, চকচক করছিলো প্রতিটা চক্ষু, একটা ক্লান্ত সময়! একটা ক্লান্ত সময়! কিভাবে চকচক করছিলো প্রতিটা ক্লান্ত চোখ, যখন চোখ রাখলাম পশ্চিমাভিমুখে, দেখলাম কিছু একটা নড়ছে আসমানে। প্রথমে মনে হলো যেন একটা ছোট্ট কণা, পরে মনে হলো এক খণ্ড কুয়াশা; এটা ঘুরতে থাকলো, ঘুরতেই থাকলো, অবশেষে ধারণ […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (দ্বিতীয়াংশ)

সূর্যটা এখন উদিত হলো ডান দিকটায়, যেন সাগরের নিচ থেকে ভেসে উঠলো, এখনো কুয়াশায় লুকিয়ে আছে, বাঁ দিকটায়, ডুব দিলো সাগরে। এবং এখনো সুন্দর দখিনা বাতাস বয়ে চলছে পেছনে, কিন্তু এবার কোনো সুন্দর পাখি আমাদের পিছু নেয়নি, না কোনো পাখি এসেছিলো খেতে অথবা খেলতে নাবিকের কামরায়! এবং আমি একটা পাপিষ্ঠ কাজ করে বসেছি, যা তাঁদের […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (প্রথমাংশ)

ভূমিকা ইংরেজ রোমান্টিক কবি স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ তাঁর এই কবিতা “দ্যা রাইম অব দ্যা এইনশানট মেরিনার” এর জন্য সুবিখ্যাত। কবিতাটা মূলত কাহিনী নির্ভর। প্রশান্ত মহাসাগরে প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে, অদ্ভুত সব ঘটনা আর এডবেঞ্চারের মধ্য দিয়ে কিভাবে বৃদ্ধ নাবিক দেশে ফিরে আসে সেই লোমহর্ষক ভূতুড়ে কাহিনী বুড়ো লোকটি মানুষকে ধরে বসিয়ে শোনায়। একবার, দুইবার, বারবার। কবিতাটা […]

দ্যা ক্রাঞ্চ

অনেক বেশি অনেক কম অনেক মোটা অনেক চিকন অথবা অখ্যাত। হাসি অথবা অশ্রুজল বিদ্বেষী প্রেমিক পেরেকের পিঠের মত আগুন্তকের মুখ রক্তভেজা পথে দৌড়ুচ্ছে সৈন্যরা নাড়াচ্ছে মদের বোতল সঙ্গিন দিয়ে খোঁচাচ্ছে আর চুদছে কুমারীদের। একটি সস্তা ঘরে মি. মনরোর ছবি হাতে বসে আছে এক বৃদ্ধ। বিশাল এক একাকীত্বে ছেয়ে আছে পৃথিবীটা ঘড়ির কাঁটার মন্থর নড়াচড়ায়ও দেখতে […]

উপড়ে ফেল আমার দুটি চোখ

উপড়ে ফেল আমার দুটি চোখ, আমি তোমাকেই দেখব, সিলগালা করে দাও আমার দুই কান, আমি তোমাকেই শুনব। এবং পা ছাড়াই তোমার কাছে ছুটে যাব আমি, মুখ ছাড়াই আমি জপতে থাকব তোমার নাম। ভেঙ্গে চুরমার করো আমার বাহুদ্বয়, তোমাকে ধরে রাখব, হৃদপিণ্ডই হয়ে উঠবে আমার হাত। হৃদপিণ্ডকে থামিয়ে দাও, ধুক ধুক ধ্বনি শুরু হয়ে যাবে আমার […]

হে বসন্ত!

তোমার ঐ শিশিরসিক্ত কেশ! তুমি সকালের পরিষ্কার জানালা দিয়ে চোখ ফেলো নিচে, এখানে। তোমার ঐশ্বরিক চোখ ঘুরাও আমাদের পশ্চিম দ্বীপটায়, যেখানে পুরো গানের দল তোমাকে উৎযাপনের তরে ছোটে, হে বসন্ত! পাহাড় গুলো কথা বলে একে অন্যের সাথে। উপত্যকারা কান পেতে শুনে। আমাদের আকাঙ্খায় ভঁরা চোখগুলো তাকিয়ে থাকে তোমার উজ্জ্বল প্যভিলিয়নের দিকেঃ সামনে এসো এবং তোমার […]

ওয়েস্টল্যান্ড ওয়ার্ডস

শব্দেরা কি পৃথক হয়, বিচ্ছিন্ন হয়? নাকি একটা লম্বা বেলুনের থোকার মত — তারা উড়ে বেড়ায়, আর ফুটতে থাকে একই সময়ে? অপূর্ব নীলিমা এই তো সব! কোন বিন্দু নয়, কেন্দ্র নয় — তবুও সর্বত্র ভেসে বেড়ায় স্মিত হাস্য মুখখানি। তর্জমা © শরিফুল ইসলাম নভেম্বর ২২, ২০১৬। [নিক জেরনিন — ওয়েস্টল্যান্ড ওয়ার্ডস]

নাইট অব স্লিপলেস লাভ

রাত্রিটা দাঁড়িয়ে ছিল মাথার উপর। আমরা দু’জন। পূর্ণিমা। কান্না জুড়ে দিলাম আমি, তুমি হাসলে। তোমার অবজ্ঞা হয়ে উঠেছিল ঈশ্বর, আমার আর্তনাদ মুহূর্ত আর ঘুঘুরা আটকা পড়েছিল শিকলে। রাত্রিটা শুয়ে ছিল পদতলে। আমরা দু’জন। ব্যথার কাঁচ। মহা দূরত্বে ছড়িয়ে পড়েছিল তোমার ফুঁপানো কান্না। তোমার ক্ষীণ হৃদপিণ্ডের উপরে আমার ব্যথাটা ছিল একটা নিদারুণ যন্ত্রণার থাবা। ভোর এল […]