মন্টেইন তার প্রথমদিককার লেখা প্রবন্ধ ‘অন সলিটিউড’-এ জনপ্রিয় প্রাচীন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন, সেটা হলঃ অন্যদের ভিড়ে বাঁচার নৈতিক এবং বুদ্ধিগত বিপদ, এবং নির্জনতার মূল্য। নির্জনতার কথা বলতে গিয়ে মন্টেইন শারীরিক নির্জনতার উপর জোর দেননি, বরং আপামর জনগণের মতামত আর কর্মকাণ্ডে নির্বোধভাবে নিজেকে ছেড়ে দেয়ার আকর্ষণীয় লোভকে সংযত করার ক্ষমতা অর্জনের কথা গুরুত্বের সাথে […]
Tag: Translation
এপিকিউরাসঃ মৃত্যুকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই
প্লেটো আর অ্যারিস্টটলের চিন্তা যখন ইতোমধ্যে প্রাচীন গ্রীস দর্শনের চূড়ায়, তখন জন্ম হয়েছিলো এপিকিউরাসের। দার্শনিক চিন্তার মূল ফোকাস তখন অধ্যাত্মতত্ব থেকে সরে যাচ্ছিলো নীতিশাস্ত্রের দিকে—রাজনৈতিক নীতিশাস্ত্র থেকে ব্যক্তিগত নীতিশাস্ত্রের দিকে। যাইহোক, পূর্ববর্তী দার্শনিকদের অনুসন্ধান, যেমন মানুষের মৌলিক ধ্যান-ধারণা এবং মূল্যবোধের সত্যকে পরখ করা নিয়ে সক্রেটিসের চিন্তায় এপিকিউরাস খুঁজে পেয়েছিলেন নতুন চিন্তার বীজ। মানুষের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য […]
জিনোঃ জীবনের লক্ষ্য হল প্রকৃতির সাথে এক হয়ে বাঁচা
অ্যারিস্টটলের মৃত্যুর পর পশ্চিমা দর্শনে দুটি প্রধান দার্শনিক চিন্তার স্কুলের আবির্ভাব হয়েছিলো। একটা ছিল এপিকিউরাসের ঈশ্বরহীন আনন্দবাদী নীতি—যেটা লোকের কাছে খুব একটা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি, আর আরেকটা ছিল জিনো অফ সিটিয়াম-এর জনপ্রিয় এবং দীর্ঘ মেয়াদী নিঃস্পৃহবাদ। জিনো ডাইয়োজিনিস-এর অনুসারী সিনিকদের সাথে পড়ালেখা করেছিলেন—যেখানে তিনি ব্যক্ত করেছিলেন জীবনের প্রতি তার বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কথা। আধ্যাত্মিক জল্পনা-কল্পনায় তার ধৈর্য […]
ডাইয়োজিনিসঃ অল্পতে যে তুষ্ট সেই ধনী
ডাইয়োজিনিসের কথা বলতে গিয়ে প্লেটো একবার বলেছিলেন, “সে হল পাগল হয়ে যাওয়া সক্রেটিস।” যদিও কথাটা উনি বলেছিলেন অপমান করার উদ্দেশ্যে, কিন্তু কথাটা খুব একটা মিথ্যা না। সক্রেটিসের মত ভালো কাজ করা এবং জাগতিক আরাম-আয়েশকে প্রত্যাখ্যান করার অনুরাগ ডাইয়োজিনিসেরও ছিল, কিন্তু ডাইয়োজিনিস সেটাকে নিয়ে গিয়েছিলেন চরম পর্যায়ে। তার মতে, একটা ভালো কিংবা বাঁচার যোগ্য জীবন যাপন […]
ডেমোক্রিটাস এবং লিওকিপাসঃ অস্তিত্বে শূন্য আর পরমাণু ছাড়া কিছু নেই
ব্রহ্মাণ্ড কি একটা একক মৌলিক উপাদান থেকে তৈরি কিনা সেটা নিয়ে দার্শনিকরা ভাবা শুরু করেছিলেন খ্রিস্টপূর্ব ছয় শতাব্দীর পর থেকে। পঞ্চম শতাব্দীর দিকে, গ্রীসের এবডেরা থেকে ডেমোক্রিটাস এবং লিওকিপাস নামে দু’জন দার্শনিক বললেন যে, ব্রহ্মাণ্ডের সবকিছু একটা ক্ষুদ্র, অদৃশ্য এবং অপরিবর্তনীয় কণা দ্বারা তৈরি, যার নাম উনারা দিয়েছিলেন পরমাণু। প্রথম পরমাণু থিওরি ডেমোক্রিটাস এবং লিওকিপাস […]
হেরাক্লিটাসঃ জগতে কোন কিছুই স্থির নয়
পশ্চিমা দর্শনের শুরুর দিকে ব্রহ্মাণ্ডের শারীরিক প্রকৃতি নিয়ে নানান বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা উদ্ঘাটনে গ্রীক দার্শনিকরা যখন মহা ব্যস্ত, হেরাক্লিটাস তখন বলে উঠলেন যে ব্রহ্মাণ্ডে সবকিছুই একটা ঐশ্বরিক লোগো দ্বারা পরিচালিত। এই লোগোকে মাঝে মাঝে বলা হয় ‘যুক্তি’ অথবা ‘তর্ক’। হেরাক্লিটাসের মতে, লোগো হল সর্বজনীন—একটা মহাজাগতিক নিয়ম, যাকে কেন্দ্র করেই অস্তিত্বশীল হয় সকল কিছু এবং যার মাধ্যমে […]
থেলিস অফ মিলেটাসঃ পানিই সকল বস্তুর উৎস
খ্রিস্টপূর্ব ৮-৬ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের দিকে গ্রিসের উপদ্বীপবাসীরা ধীরে ধীরে শহর-নগরে বসতি শুরু করে দিয়েছিলো। তৎকালে তারা বর্ণানুক্রমিক লেখার একটি পদ্ধতি তৈরি করেছিলো, যার সাথে সাথেই খুলে গিয়েছিলো দর্শন-জগতের এক মহাদরজা যা আজকে আমাদের কাছে পশ্চিমা দর্শন নামে পরিচিত। এর আগের বিদ্যমান সভ্যতাগুলোর কাছে তাদের চারপাশের ঘটনা-দুর্ঘটনাগুলোকে ব্যাখ্যা করার একমাত্র ভরসা ছিলো ধর্ম। সেখানে এখন […]
লাও জুঃ যে পথের কথা বলা যায় তা শাশ্বত নয়
খৃষ্টপূর্ব ছয় শতাব্দী। চীনে তখন জৌ রাজবংশের শাসনে ছেদ পড়েছে। পাশাপাশি সেখানে ঘটে গেছে এক বড় ধরনের পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের ফলে চীনের আদালতগুলোতে জন্ম নিয়েছে প্রশাসনিক এবং ম্যাজিস্ট্রেটের একটা নতুন সামাজিক দল। সমাজকে কীভাবে আরও কার্যকরভাবে শাসন করা যায় সেই সম্পর্কিত স্ট্র্যাটেজি তৈরির কাজে এরা নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছে। এদেরকে একত্রে বলা হত ‘দ্যা হান্ড্রেড স্কুলস […]
কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (শেষাংশ)
এই যে দরবেশ, ঐ জঙ্গলে তাঁর আবাস যে জঙ্গল গড়িয়ে নেমেছে সাগরটায়। কিভাবে সে তাঁর উচ্চস্বরের কণ্ঠটা ধারণ করে! নাবিকদের সাথে কথা বলতে সে ভালোবাসে যারা এসেছে দূরের কোন দেশ থেকে। সে নতজানু হয়, সকালে, বিকেলে এবং সন্ধ্যায়— তাঁর আছে একটা গোলগাল তুলতুলে গদিঃ এটা সেই শৈবাল যা পুরোপুরি ঢেকে ফেলে সেই পুরনো ওক গাছের […]
কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (ষষ্ঠাংশ)
প্রথম কণ্ঠ “কিন্তু বলো আমায়, বলো! কথা বলো, আবারো আওয়াজ তোলো তোমার ঐ নরম কণ্ঠে— কিসের জোরে ছুটে চলেছে এই জাহাজ? কী করছে এই সাগর?” দ্বিতীয় কণ্ঠ “এখনো সে কেবল ঈশ্বরের এক গোলাম মাত্র, সাগরটার নিজস্ব কোনো প্রবাহ নেই; তাঁর উজ্জ্বল বড় চক্ষু, নীরবে তাকিয়ে আছে মাথার উপরের চাঁদটার দিকে— সে হয়তো জানতোই না কোন […]