নো পেইন্টিং

কোন রং-তুলির আঁকিবুঁকি নয় যাহা আছে তাহা তাহাই থাক পাখিরা গান গেয়ে যাচ্ছে আসমান থেকে জলধারা এসে গিলে খাচ্ছে মৎসদের মঞ্চস্থ হচ্ছে নাটক নাটকের নাম “আমরা” নাটক চলছে, নাট্যশালায় আলসেমি যত গভীরেই যাওয়া যায় কখনই খুঁজে পাওয়া যায় না ‘আমি’ বলতে কিছুই। তর্জমা © শরিফুল ইসলাম নভেম্বর ০৪, ২০১৬। [পার নিয়েলসেন —নো পেইন্টিং]

আমার ভয় হয় একটা শরীরের অধিকারী হতে—

আমার ভয় হয় একটা শরীরের অধিকারী হতে— ভয় করে একটা আত্মার ভার নিতেও— অগাধ — বিপদজনক সম্পত্তি— মালিকানা — ঐচ্ছিক নয়— জোড়া সম্পদ — লিখে দেয়া হয়েছে একজন সন্দেহাতীত উত্তরাধিকারের ভোগে— একজন নৃপতি, অমরত্বের একটা মুহূর্তে এবং ঈশ্বর, একটা সীমান্তে। তর্জমা © শরিফুল ইসলাম এপ্রিল ০৭, ২০১৭। [এমিলি ডিকিনসন]

প্রতিধ্বনি

আমি জানি আমি গুপ্তধন খুজছিলাম পুকুরের স্বচ্ছ জলে যখন তোমার মুখ… যখন তোমার মুখটি যেন কুয়োয় প্রতিফলিত চাঁদ। যেখানে আমার ইচ্ছে… যেখানে খুব ইচ্ছে পুষি তোমার চুমুর হিমশীতল অগ্নি ছোঁয়ার শুধু আমার ঠোঁটের জলে যেখানে তোমার মুখ… যেখানে তোমার মুখের ছবির প্রতিফলন হয়, প্রাণবন্ত! ঠিক সেখানে নয়, যখন আমি পেছন ফিরে দেখি শূন্য হাওয়া। সেই […]

রানী

আমি তোমার নাম দিয়েছি রানী। তোমার চেয়েও দীর্ঘদেহী কেউ আছে, আরও দীর্ঘ। তোমার চেয়েও বিশুদ্ধ কেউ আছে, আরও বিশুদ্ধ। তোমার চেয়েও প্রাণবন্ত কেউ আছে, আরও প্রাণবন্ত। কিন্তু তুমিই রানী। যখন তুমি হেঁটে বেড়াও রাস্তাগুলোতে কেউ চিনতে পারে না তোমাকে। দেখতে পায় না কেউ তোমার মাথার স্বচ্ছ মুকুট, চোখ পড়ে না কারো তোমার পায়ের তলায় দলিত […]

মস্তিষ্কে অনুভূত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া

মরি তো প্রতিদিনই, প্রতি মুহূর্তে। আশা মরে, স্বপ্ন মরে, মরণ নিজেও মরে। সেদিনও মরেছিলাম। মস্তিষ্কে অনুভুত হয়েছিল একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। ছিল শোকার্তরা, দ্বিধান্বিত। তাদের পদধ্বনি অবিরাম মাড়িয়ে যাচ্ছিলো অনুভূতি ছেদনের আগ পর্যন্ত। যখন সবাই উপবিষ্ট একটা অনুষ্ঠান, ড্রামের মত বেজে যাচ্ছিলো মন অসাড় হওয়ার আগ পর্যন্ত। তারপর শুনতে পেলাম বাক্স উত্তোলনের কড়কড় শব্দ। সেই একই বুট জুতা […]

অ্যামোর

এতগুলো দিন, আহ! এতগুলো দিন এতটা কাছে, এতটা স্পষ্ট করে দেখেছি তোমায় কি করে শোধবো এই ঋণ, কি দিয়ে শোধবো, বলো? কুঞ্জবনে জেগে উঠেছে রক্ত পিপাসু বসন্তটা। শৃগালেরা ছেড়েছে তাঁদের ধরাধাম, সর্পরা আকণ্ঠ পান করেছে শিশির বিন্দু, আর আমি, দেবদারু আর নীরবতার মাঝখানে তোমার সাথে ঘুরে বেড়াই পাতায় পাতায়, নিজেকে সুধাই, কখন এবং কিভাবে তোমাকে […]

সবার সাথে একা

মাংস পিণ্ডটা আচ্ছাদিত করে কঙ্কালটাকে আর তাঁরা সেখানে জুরে দেয় একটা মন কখনও কখনও একটা আত্মা, মহিলাটা ফুলদানিগুলো ছুড়ে মারে দেয়ালে, ভেঙ্গে চুরমার লোকটা মদ গেলে খুব এবং কেউই খুঁজে পায় না একজনকে কিন্তু খুঁজতে থাকে সবাই হামাগুড়ি দিয়ে উঠে, নেমে বিছানা থেকে। মাংস আচ্ছাদিত করে কঙ্কালটাকে, আর মাংস খুঁজে বেড়ায় মাংসের চাইতেও বেশী কিছু। […]

আমার পেছনে ডুব দেয় অনন্তকাল

আমার পেছনে — ডুব দেয় অনন্তকাল— আমার সম্মুখে — অমরত্ব— আর আমি — এ দুয়ের মধ্যিখানে— মৃত্যু হল পুবাকাশের ধূসর প্রবাহমান বাতাস, মিশে যায় ভোরের নরম আলোয়, পশ্চিমে দিন শুরুর আগেই— এটা রাজত্ব — অতঃপর — তাঁরা বলে— নিখুঁত — বিরতিহীন রাজতন্ত্র— যার রাজপুত্র — অমানবের ছেলে— সে— তাঁর অন্তহীন বংশ পরম্পরা— সে — বৈচিত্রপূর্ণ […]

দূরে যাইও না

দূরে যাইও না, একদিনের জন্যেও না, কারণ— কারণ — ক্যামনে বলিঃ একটা দিন যে অনেক লম্বা আমি অপেক্ষা করতে থাকব তোমার জন্যে, যেন একটা শূন্য ষ্টেশনে যখন ট্রেনগুলা এক কোনায় পইড়া থাকে, ঘুমে বিভোর। আমারে ছাইড়ো না, এক ঘণ্টার জন্যেও না, কারণ তখন যন্ত্রণার ছোট ছোট ফোঁটাগুলা এক হইয়া দৌড়াবে, ঘরের খোঁজে কাতর এদিক-ওদিক ঘুইরা […]

আমি কেহ নই! তুমি কে?

আমি কেহ নই! তুমি কে? তুমিও কি আমার মতই কেহ নও? তাহলে তো আমরা এখন দু’জন — কাউকে বলো না কিন্তু! শুনতে পেলে তাঁরা ডাক ঢোল পেটাবে — জানো তো! আহ! কি ক্লান্তিকর কেহ হওয়াটা! কতটা লৌকিক! একটা ব্যাঙের মত সারাটা দিন প্রশংসায় পঞ্চমুখ সোঁদা মাটির দিকে তাকিয়ে নির্লজ্জের মত নিজের নাম আওড়ানো ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, […]