প্রাণের নাশ এবং সাইক্লিক্যাল রিয়্যালিটি

ভিয়েতনামিজ আধ্যাত্মিক গুরু থিচ নাট হানের মা মারা যাওয়ার পর প্রায় বছর দেড়েক তিনি গভীর শোকে আচ্ছন্ন ছিলেন। মায়ের মৃত্যুর মত এমন ব্যথা তিনি তার জীবনে আর কোনকিছুতেই পান নি। মা ছিল, এখন আর নেই, এই বিষয়টা তার মন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না। একটা মানুষ ‘ছিল’ থেকে কীভাবে ‘নাই’ হয়ে যেতে পারে এটা তিনি […]

জীবনের মূল সাধনা কোনটা?

মনুষ্য ইগো বহির্জগতের সবকিছুকে জয় করার যে প্রবণতা ধারণ করে সেটা শানিত হয়ে উচ্চমার্গে গিয়ে পৌঁছায় তখন, যখন সে নিজের প্রবৃত্তিকে জয় করতে আগ্রহী হয়ে উঠে। এটা যেহেতু অন্তর্জগতের কাজ, তাই কাজটা বেশ কঠিন। এই কাজে নামার কথা ভাবতেও দরকার পড়ে এক ধরণের পরিপক্বতার। এর জন্যে মানুষ আধ্যাত্মিক সাধনায় নিমগ্ন হয়। সাধনা কী? বহির্জগতের কোনকিছুকে […]

এক্সিস্টেনশিয়াল এবসারডিটি

জীবন ও জগৎকে বোঝার ক্ষেত্রে মানুষ সাধারণত অথবা বেশীরভাগ সময় মানুষকেই প্রধান সাবজেক্ট হিসেবে ধরে সামনে এগোয়। এটা হয়তো মানুষের এন্ত্রোপোসেন্ট্রিক তথা মানবকেন্দ্রিক চিন্তা করার ন্যাচারাল ধর্মীয় স্বভাব থেকেই আসে। এমনকি দার্শনিক ও সাইন্টিফিক এক্সপ্লোরেশনেও মানুষ খুব বেশি মানবকেন্দ্রিক চিন্তার বাইরে গিয়ে জিনিসপত্রকে বোঝার চেষ্টা করতে পারে না। এটা হয়তো সম্ভবও নয়। কারণ, মস্তিষ্কের সাবজেক্টিভিটি […]

মানুষের এক্সিসটেনশিয়াল সমতা

আজ থেকে দুই হাজার বছর আগে একজন রাজা তার জীবদ্দশায় যে পরিমাণ আরাম-আয়েস আর সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতো বর্তমানে একজন ছাপোষা কেরানীও তার থেকে শতগুণ বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারছে। প্রযুক্তির উৎকর্ষে এখন একজন কেরানী যোগাযোগ, যাতায়াত, আর দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে যে গতি এবং কনভেনিয়েন্স পাচ্ছে, দুই হাজার বছর আগে একজন রাজা সেটা স্বপ্নেও চিন্তা করতে পারতো […]

মানুষ কি ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা বাদ দিতে পারে?

১৮৪৮ সাল। শরতের এক ঝলমলে দিনে রুটল্যান্ড রেললাইনের ফোরম্যান ফিনিয়াস গেইজ কাজে গিয়ে একটা দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। তার পায়ের কাছে একটা ছোট বিস্ফোরণ ঘটে এবং সাড়ে তিন ফুট লম্বা একটা লোহার রড ছুটে গিয়ে তার বাম চোয়ালের নিচ দিয়ে ঢুকে তার কপালের উপরের অংশ দিয়ে ফুঁড়ে বের হয়। এতে করে রডের আগায় লেগে বেশ খানিকটা […]

মানুষের স্যালভেশন কোথায়?

সভ্যতার উত্থানের মূলে কাজ করেছিলো মনুষ্যমনের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের খচখচানি। পাথরের টুল থেকে শুরু করে বর্তমানের সফিস্টিকেটেড টেকনোলোজি উদ্ভাবনের ধারায় প্যারালালি মানুষের দুটো খায়েস পূরণ হয়ে আসছেঃ একটা হল কৌতূহল নিবারণ, আরেকটা হল লাইফ কনভেনিয়েন্স। পাথরের টুলের পরে আগুন জ্বালানো, বিভিন্ন প্রাণীদেরকে গৃহপালিত করা, কৃষি কাজ এবং চাকা আবিস্কার এই সবই হিউম্যান কগনিশনের ডাইসেকশন (ব্যবচ্ছেদ)-এর ন্যাচারের […]

মৃত্যুর ব্যক্তিরূপ

সাহিত্যে পারসোনিফিকেশন বলে একটা কথা আছে। কোন বস্তু কিংবা বিমূর্ত ব্যাপারকে ব্যক্তিরূপ দান করে তাকে একটা চরিত্র হিসেবে গল্পে তুলে ধরাকে পারসোনিফিকেশন বলা হয়। এযাবতকালে, মিথলোজি, শিল্প, সাহিত্য আর পপ কালচারে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং যে বিমূর্ত ব্যাপারটাকে পারসোনিফাইড করা হয়েছে সেটা হল মৃত্যু। ১৯৫৭ সালে সুইডিশ পরিচালক ইংমার বার্গম্যান পরিচালিত সিনেমা ‘দ্যা সেভেন্থ সিল’ মৃত্যুকে পারসোনিফাই […]

কোন পথে সুখ?

মানুষের সুখী হওয়ার বেশকিছু প্রতিষ্ঠিত পন্থা রয়েছে। এসবের মধ্যে কে কোন পন্থা অনুসরণ করবে সেটা নির্ভর করে তার নিজস্ব জীবনবোধের উপর। কারণ, উদ্দেশ্য এক হলেও একেক পন্থার কলাকৌশল একেক রকম। সেগুলো কী সেটা জানার আগে একজন মানুষকে প্রথমেই বোঝা উচিৎ সুখ অনুভবে মনুষ্যমনের চরিত্র কেমন। সুখ সাধারণত আসে সন্তুষ্টি থেকে। আর সন্তুষ্টি আসে আমাদের মানসিক […]

জীবন কি নয়রাথের নৌকা?

ধরুন, একদল নাবিক একটা নৌকা কিংবা জাহাজে করে পাড়ি দিচ্ছে সুদীর্ঘ জলপথ। তাদের পথ এতটাই দীর্ঘ যে, জলে থাকা অবস্থাতেই তাদেরকে ধীরে ধীরে পুনর্নির্মাণ করতে হবে নৌকাটাকে। এটা চলতি পথে জলে থাকা অবস্থাতেই করতে হবে, শুকনো জায়গায় নৌকাটাকে তুলে নিয়ে ভেঙ্গেচুরে ঠিকঠাক মেরামত করার কোন সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে, একটা পুরনো কাঠ সরাতে চাইলে সাথে সাথে […]

দি ড্রাগ

শইল্যে আর সয় না মনে কি সয়? আত্মায়? শেফালির মা’র দেহ গ্লানি, মনোগ্লানি— কত ভার সংসারের? দার্শনিকের এত গ্লানি, যন্ত্রণায়— কত ভার চেতনের? সিনেটরের দীর্ঘ মুখ ঝুলে পড়ে অনিচ্ছায়— কত ভার গাম্ভীর্যের? আঁখিজলে ধর্মযাজক কপোল ভাসে অনুশোচনায়— কত ভার আদিপাপের? তবুও সয় সয় লো—এই জগতের ভার। একটু যে সুখ, একটা যে নেশা জীবনের।