অনেকগুলো চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে মনুষ্য জীবনের প্রধান চাওয়া-পাওয়া হল—শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং সুখ। এগুলো সবাই চায়। একেকজন একেক ফর্মে। আপনিও চান। এই চাওয়ায় দোষ নাই। কিন্তু প্যারাডক্সিক্যালি এগুলো পেতে গিয়ে আপনি যদি মাত্রাতিরিক্ত চেষ্টায় রত হয়ে যান তাহলে পরিণতিতে আপনি হবেন—নিঃসঙ্গ, বিষণ্ণ এবং দুর্দশাগ্রস্ত। নৌবাহিনীর ‘নেভি সিল’ ট্রেনিং-এ ‘ড্রাউন প্রুফিং’ নামে একটি অংশ আছে, যেখানে আপনার […]
মেরুসঙ্গম
ধরো তুমি উত্তর আর আমি দক্ষিণ যখন প্রবেশ করি তোমার ভেতর— আমি ভুলে যাই ঈশ্বরের কথা, অথবা ঈশ্বর ভুলে যান নিজের কথা। শরীর থেকে খসে পড়লে ঐশ্বরিক বসন, আমি হয়ে উঠি এক পূর্ণ মানব। সাক্ষাৎ হয় উত্তর আর দক্ষিণ মেরুতে। ধরো তুমি উত্তর আর আমি দক্ষিণ যখন প্রবেশ করি তোমার ভেতর— তুমি আর তুমি থাকো […]
হিউম্যান মাইন্ডের কালেক্টিভ সংস্কার
সুদূর ভবিষ্যৎ। একটা ডেডলি ভাইরাসের আক্রমণে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেছে। না, পুরোপুরি ধ্বংস অবশ্য হয় নাই। গোটা পৃথিবীতে মানুষ বেঁচে আছে দুই মিলিয়নেরও কম। কীভাবে এরা বেঁচে গেল সে ব্যাখ্যায় এখন না যাই। বেঁচে গেল আর কি। তবে বেঁচে গেলেও এরা হারিয়ে ফেলেছে একটা বড় ইন্দ্রিয়। দৃষ্টিশক্তি। অর্থাৎ এই দুই মিলিয়ন অথবা দুই মিলিয়নের কম […]
অ-মৃত্যু
আমাকে ভেঙ্গে পড়তে দাও, আর কত শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকার শাস্তি দেবে আমায়? সৌন্দর্যের পদতলে দলিত মথিত হোক আমার অহং। আমাকে গলে যেতে দাও, শক্ত হয়ে থাকার ভার আমি আর কত বইব, বলো? এক আঁজলা প্রেমেই গলে বেয়ে সমুদ্রে নেমে যাক আমার অহং। আমাকে মরে যেতে দাও, বেঁচে থাকার ভান করে করে আমি কি […]
একা
যখন আমাকে দেখো তুমি একা লাগে না? যেন শীতের দুপুরে আমি কুণ্ডলী পাকানো কুয়াশা, আমার কারণে সূর্যের সঙ্গবিহীন দুপুরটার যেমন একা লাগে। পুকুরের জলে একটা আস্ত নদী এনে ডুবিয়ে দিলে জলের শরীর বেড়ে যেমন গাঢ় হবে পুকুরের একাকীত্ব— তেমনি আমি তোমাতে ডুবলেও কি তোমার একা লাগবে না? গভীর ধ্যানে আমার মনযোগের নিরবিচ্ছিন্নতায় যখন নিঃশ্বাসটা একা […]
মরালীটি
সিনেমা পরিচালক কাজী হায়াৎ একবার এক রেডিও ইন্টার্ভিউতে বলেছিলেন, সিনেমা অনেক শক্তিশালী। এটা মানুষকে একটা কমন মরাল গ্রাউন্ডে দাঁড় করানোর অন্যতম মাধ্যম। একটা উদাহরণ দিয়ে উনি বলেছিলেন, যদি একজন ছিনতাইকারী সিনেমা দেখতে হলে যায় (শুধু সিনেমা দেখার জন্য), আর সেই সিনেমায় যদি কোন ছিনতাইয়ের দৃশ্য থাকে যেখানে নায়িকার হাতের ব্যাগ ছিনতাই হওয়ার পর নায়ক দৌড়ে […]
দ্যা ক্রাঞ্চ
অনেক বেশি অনেক কম অনেক মোটা অনেক চিকন অথবা অখ্যাত। হাসি অথবা অশ্রুজল বিদ্বেষী প্রেমিক পেরেকের পিঠের মত আগুন্তকের মুখ রক্তভেজা পথে দৌড়ুচ্ছে সৈন্যরা নাড়াচ্ছে মদের বোতল সঙ্গিন দিয়ে খোঁচাচ্ছে আর চুদছে কুমারীদের। একটি সস্তা ঘরে মি. মনরোর ছবি হাতে বসে আছে এক বৃদ্ধ। বিশাল এক একাকীত্বে ছেয়ে আছে পৃথিবীটা ঘড়ির কাঁটার মন্থর নড়াচড়ায়ও দেখতে […]
অর্ক
১৯৬৮ সাল। একটা জমাট বাঁধা উত্তেজনা আনন্দে রূপ নিয়ে ছাগল শাবকের মত লাফিয়ে বেড়াচ্ছে সাত বছর বয়সী অর্কের মনে। কারণ এই মাত্রই অর্ক বেশ কিছুদিন ধরে চেষ্টা করে যাওয়া একটা যন্ত্র বানানোর কাজ সফলভাবে শেষ করতে সক্ষম হয়েছে। যন্ত্রটা দিয়ে এখন সে দূর থেকেই তার কুকুরের ঘরের দরজাটা খুলতে এবং বন্ধ করতে পারবে। ব্যাপারটা আনন্দেরই। […]
সন্ধিক্ষণ
নিঃশ্বাস নেয়া আর ছাড়ার মধ্যিখানের গ্যাপ— মুহূর্তে থেমে যায় ব্রহ্মাণ্ডের সব স্পন্দন, মৃত্যু হয় সব কিছুর। স্বাদের মৃৃত্যু—কোলে নিয়ে বসে থাকে অন্তহীনতা। এই মৃত্যু মুহূর্তে আমি নৈকট্য পাই তোমার। এখানেই গড়ে উঠে আমাদের সংসার। স্থির সংসার। সবকিছু বড় হয়, বুড়ো হয়, জীর্ণতায় ফুটে উঠে তোমার পুরনো সৌন্দর্য, আমার মুচকি হাসিতে এই প্রলম্বিত মৃত্যু—নিঃস্বেশ হয় পরবর্তী […]
আমাদের সিজোফ্রেনিক ব্যক্তিত্ব, ডুয়ালিটি, আর নো-সেলফ
মানুষ যে স্বাধীন প্রাণী সেইটার একটা প্রমান হইল সে নিজেরে নিজে মাইরা ফেলতে পারে। অর্থাৎ মানুষ আত্মহত্যা করতে পারে। তবে মানুষের ‘ফ্রি উইল’ তথা স্বাধীন ইচ্ছার যে কয়টা থিওরি আছে সেইগুলা বিশ্লেষণ করা শুরু করলে হয়তো আমার এইখানে বলা ‘প্রমাণ’ কথাটা টিকবে না। সেইদিকে এখন না যাই। অন্য যে কোন কাজের পেছনে হাজার হাজার ভেরিয়েবল […]