লাও জুঃ যে পথের কথা বলা যায় তা শাশ্বত নয়

খৃষ্টপূর্ব ছয় শতাব্দী। চীনে তখন জৌ রাজবংশের শাসনে ছেদ পড়েছে। পাশাপাশি সেখানে ঘটে গেছে এক বড় ধরনের পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের ফলে চীনের আদালতগুলোতে জন্ম নিয়েছে প্রশাসনিক এবং ম্যাজিস্ট্রেটের একটা নতুন সামাজিক দল। সমাজকে কীভাবে আরও কার্যকরভাবে শাসন করা যায় সেই সম্পর্কিত স্ট্র্যাটেজি তৈরির কাজে এরা নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছে। এদেরকে একত্রে বলা হত ‘দ্যা হান্ড্রেড স্কুলস […]

জনপ্রিয়তা, স্টুপিডিটি আর ইন্টেলেক্ট

সাহিত্য, সিনেমা কিংবা অন্য যে-কোন আর্টওয়ার্ক সৃষ্টিকারীরা প্রধানত দুই ভাবে কাজ করে কিংবা বলা যায় দুই দলে কাজ করে। এর মধ্যে একদল হলো যারা সাধারণ মানুষের এক্সিসটিং রুচিকে স্যাটিসফাই করে শিল্পকর্ম করে। এতে তাদের কর্ম বহুসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছায়। মানুষ তাদের লেখা পড়ে কিংবা সিনেমা দেখে গণহারে। তাদের কর্ম জনপ্রিয়তা পায়। এর একটা কারণ, এইসব […]

আবু কাউছারের স্বর্গ

রাত এগারোটা কি বারোটা হবে। বারোটা হলেই বোধহয় সুবিধে। ঘটনা কিংবা দুর্ঘটনা ঘটার জন্য একটা উপযুক্ত সময়। স্ট্রিট ল্যাম্পের নিঃসঙ্গ আলোটা অথবা এটা চাঁদের আলোও হতে পারে—কারণ তখনো শহরে দৈত্যাকার দালানগুলোর মাথা ডিঙিয়ে চাঁদটা নিজের একাকীত্ব বিছিয়ে দিতে নেমে আসতো পিচঢালা রাস্তাগুলোতে, কাঁচ ভেদ করে উঁকি দিত দিবসের ক্লান্তিতে ঝিমুনি ধরা সেলুন কিংবা বন্ধকীর দোকানে—লাল […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (শেষাংশ)

এই যে দরবেশ, ঐ জঙ্গলে তাঁর আবাস যে জঙ্গল গড়িয়ে নেমেছে সাগরটায়। কিভাবে সে তাঁর উচ্চস্বরের কণ্ঠটা ধারণ করে! নাবিকদের সাথে কথা বলতে সে ভালোবাসে যারা এসেছে দূরের কোন দেশ থেকে। সে নতজানু হয়, সকালে, বিকেলে এবং সন্ধ্যায়— তাঁর আছে একটা গোলগাল তুলতুলে গদিঃ এটা সেই শৈবাল যা পুরোপুরি ঢেকে ফেলে সেই পুরনো ওক গাছের […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (ষষ্ঠাংশ)

প্রথম কণ্ঠ “কিন্তু বলো আমায়, বলো! কথা বলো, আবারো আওয়াজ তোলো তোমার ঐ নরম কণ্ঠে— কিসের জোরে ছুটে চলেছে এই জাহাজ? কী করছে এই সাগর?” দ্বিতীয় কণ্ঠ “এখনো সে কেবল ঈশ্বরের এক গোলাম মাত্র, সাগরটার নিজস্ব কোনো প্রবাহ নেই; তাঁর উজ্জ্বল বড় চক্ষু, নীরবে তাকিয়ে আছে মাথার উপরের চাঁদটার দিকে— সে হয়তো জানতোই না কোন […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (পঞ্চমাংশ)

আহ ঘুম! একটা প্রশান্তির জিনিস, উত্তর থেকে দক্ষিণ মেরু, সবাই তাঁকে ভালোবাসে! সকল প্রশংসা ঐ মেরি কুইনের জন্যে! সেই তো স্বর্গ থেকে পাঠিয়েছে এমন প্রশান্তির ঘুম, যে ঘুম পিছলে ঢুকে পড়েছে আমার আত্মার অভ্যন্তরে। ডেকের উপর খালি পাত্র গুলো, অনেকক্ষণ ধরে এমনিই পড়ে ছিলো, স্বপ্নে দেখলাম, পাত্র গুলো শিশির জলে ভরে গিয়েছিলো; যখন জেগে উঠলাম, […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (চতুর্থাংশ)

‘তোমাকে আমার ভয় করে, বুড়ো নাবিক! ভয় করে তোমার ঐ হাড্ডিসার হাত! তোমার সরু, ক্ষীণ আর বাদামী দেহ ঠিক যেন সাগরের বুকে ভেসে উঠা সরু চর। তোমাকে আমার ভয় করে, ভয় করে তোমার চকচকে চোখ, তোমার হাড্ডিসার অতি বাদামী হাত।’— ভয় নেই, ভয় পেওনা, হে বিয়ের-অতিথি এ দেহটা এখনো দাঁড়িয়ে আছে। একা, একা, একেবারে, একদম […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (তৃতীয়াংশ)

একটা ক্লান্ত সময় পার হচ্ছিলো। প্রতিটা কণ্ঠনালী শুকিয়ে হয়েছিলো কাঠ, চকচক করছিলো প্রতিটা চক্ষু, একটা ক্লান্ত সময়! একটা ক্লান্ত সময়! কিভাবে চকচক করছিলো প্রতিটা ক্লান্ত চোখ, যখন চোখ রাখলাম পশ্চিমাভিমুখে, দেখলাম কিছু একটা নড়ছে আসমানে। প্রথমে মনে হলো যেন একটা ছোট্ট কণা, পরে মনে হলো এক খণ্ড কুয়াশা; এটা ঘুরতে থাকলো, ঘুরতেই থাকলো, অবশেষে ধারণ […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (দ্বিতীয়াংশ)

সূর্যটা এখন উদিত হলো ডান দিকটায়, যেন সাগরের নিচ থেকে ভেসে উঠলো, এখনো কুয়াশায় লুকিয়ে আছে, বাঁ দিকটায়, ডুব দিলো সাগরে। এবং এখনো সুন্দর দখিনা বাতাস বয়ে চলছে পেছনে, কিন্তু এবার কোনো সুন্দর পাখি আমাদের পিছু নেয়নি, না কোনো পাখি এসেছিলো খেতে অথবা খেলতে নাবিকের কামরায়! এবং আমি একটা পাপিষ্ঠ কাজ করে বসেছি, যা তাঁদের […]

কোলরিজের কবিতা: বুড়ো নাবিকের গান (প্রথমাংশ)

ভূমিকা ইংরেজ রোমান্টিক কবি স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ তাঁর এই কবিতা “দ্যা রাইম অব দ্যা এইনশানট মেরিনার” এর জন্য সুবিখ্যাত। কবিতাটা মূলত কাহিনী নির্ভর। প্রশান্ত মহাসাগরে প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে, অদ্ভুত সব ঘটনা আর এডবেঞ্চারের মধ্য দিয়ে কিভাবে বৃদ্ধ নাবিক দেশে ফিরে আসে সেই লোমহর্ষক ভূতুড়ে কাহিনী বুড়ো লোকটি মানুষকে ধরে বসিয়ে শোনায়। একবার, দুইবার, বারবার। কবিতাটা […]