আধুনিক মানুষকে সবচেয়ে বেশি বিভ্রান্ত করে রেখেছে যে আইডিয়া সেটা হল ‘ফ্রিডম’ তথা স্বাধীনতা তথা মুক্তি। এর মধ্যে ফ্রিডম নিয়ে বেশি বিভ্রান্তিতে ভুগছে নারীবাদ। প্রাক-আধুনিক যুগে কোন ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ছিল না। ব্যক্তিকে তখন ব্যক্তি হিসেবেই দেখা হতো না। ফ্রিডম ব্যাপারটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়ালো বিংশ শতাব্দীতে এসে। ব্যক্তি স্বাধীনতার পরে নারীবাদ তথা নারী স্বাধীনতার গুরুত্বপূর্ণ […]
রিয়্যালিটির র্যানডমনেস
মানুষ প্রতিনিয়ত রিয়্যালিটির র্যানডমনেসের ভয়ংকর ঝুঁকিতে বেঁচে থাকে। নেতিবাচক ঘটনার ঝুঁকি। দৈনন্দিন চয়েস আর সিদ্ধান্তে মানুষ নিজের অজান্তেই জুয়াড়ির ভূমিকা পালন করে। দৃশ্যমান বড় আকারের একটা ঘটনাকে টানলে, যেমন, প্রতিদিন র্যানডমলি সড়ক দুর্ঘটনায় বিভিন্ন সংখ্যায় মানুষ মারা যায়। এই তথ্য জেনেও কেউ কোনদিন গাড়ি চড়া বন্ধ করে না। কারণ, সবাই মনে মনে ধরে নেয় যে, […]
মানুষের এক্সিসটেনশিয়াল সমতা
আজ থেকে দুই হাজার বছর আগে একজন রাজা তার জীবদ্দশায় যে পরিমাণ আরাম-আয়েস আর সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতো বর্তমানে একজন ছাপোষা কেরানীও তার থেকে শতগুণ বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারছে। প্রযুক্তির উৎকর্ষে এখন একজন কেরানী যোগাযোগ, যাতায়াত, আর দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে যে গতি এবং কনভেনিয়েন্স পাচ্ছে, দুই হাজার বছর আগে একজন রাজা সেটা স্বপ্নেও চিন্তা করতে পারতো […]
মানুষ কি ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা বাদ দিতে পারে?
১৮৪৮ সাল। শরতের এক ঝলমলে দিনে রুটল্যান্ড রেললাইনের ফোরম্যান ফিনিয়াস গেইজ কাজে গিয়ে একটা দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। তার পায়ের কাছে একটা ছোট বিস্ফোরণ ঘটে এবং সাড়ে তিন ফুট লম্বা একটা লোহার রড ছুটে গিয়ে তার বাম চোয়ালের নিচ দিয়ে ঢুকে তার কপালের উপরের অংশ দিয়ে ফুঁড়ে বের হয়। এতে করে রডের আগায় লেগে বেশ খানিকটা […]
টাবুলা রাসা
জগতে মানবের মধ্যে যে অসমতা দেখা যায় তা যন্ত্রণাদায়ক। মানুষের মধ্যে কেউ ধনী, কেউ গরীব, কেউ সুশ্রী, কেউ কুৎসিত, কারও বিপুল প্রতিভা, কেউ গণ্ডমূর্খ, কারও দেহবল অসুরের মত, কারও দেহ ভেঙে পড়ে ক্ষণে ক্ষণে, কেউ কথা দিয়ে যাদুকরের মত মাতিয়ে রাখতে পারে সবাইকে, কারও আবার দুচারটা কথা বলতেই পা কাঁপে, হাত কাঁপে। প্রাকৃতিক কিংবা ঐশ্বরিক […]
মানুষও এনিমেল
মানুষ আর অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে ব্যাসিক শারীরিক ম্যাকানিজমে তেমন কোন পার্থক্য নেই। শিম্পাঞ্জী আর মানুষের মধ্যে জিনগত পার্থক্য মাত্র ১%। তবুও মানুষ অন্য যে-কোন প্রাণীদের থেকে পাওয়ারফুল। মানুষের সফিসটিকেশন অন্য পর্যায়ের। এটা থেকে মানুষের মধ্যে একটা গ্র্যান্ড ধারণার জন্ম নিয়েছে যে, মানুষই শ্রেষ্ঠ। এটাকে বলা হয় এন্থ্রোপোসেন্ট্রিক চিন্তা। অন্য প্রাণীদের সাথে এত মিল থাকার পরও […]
ট্রায়াঙ্গাল অব স্যাডনেস
লিডিয়ার রাজা ক্রিসাসকে মনে করা হয় রাজাদের মধ্যে সর্বকালের সেরা ধনী। রোমান ভাষায় একটা প্রবাদই আছে যে, কোন ধনী ব্যক্তির ধনের পরিমাণ বোঝানোর ক্ষেত্রে বলা হয় ‘এই লোক তো ক্রিসাসের মত ধনী!’। একদিন গ্রিসের নামকরা আইনকর্তা সোলন এসেছিলেন রাজা ক্রিসাসকে পরিদর্শন করতে। তৎকালে সোলন তার নিষ্ঠতা, আত্মসম্মান, নমনীয়তা, সংযম, প্রজ্ঞা, বুদ্ধিমত্তা আর সাহসের জন্য ছিলেন […]
মানুষের স্যালভেশন কোথায়?
সভ্যতার উত্থানের মূলে কাজ করেছিলো মনুষ্যমনের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের খচখচানি। পাথরের টুল থেকে শুরু করে বর্তমানের সফিস্টিকেটেড টেকনোলোজি উদ্ভাবনের ধারায় প্যারালালি মানুষের দুটো খায়েস পূরণ হয়ে আসছেঃ একটা হল কৌতূহল নিবারণ, আরেকটা হল লাইফ কনভেনিয়েন্স। পাথরের টুলের পরে আগুন জ্বালানো, বিভিন্ন প্রাণীদেরকে গৃহপালিত করা, কৃষি কাজ এবং চাকা আবিস্কার এই সবই হিউম্যান কগনিশনের ডাইসেকশন (ব্যবচ্ছেদ)-এর ন্যাচারের […]
মানুষ কি পৃথিবীর ক্যান্সার?
নব্বই দশকের গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা ‘দ্যা ম্যাট্রিক্স’-এর এন্টি-হিরো এজেন্ট স্মিথ মানুষকে পৃথিবীর ক্যান্সার বলে অভিহিত করেছিল। তার ভাষায়, মানবজাতি হল একটা অসুখ, এই পৃথিবীর ক্যান্সার। তার এই কথাটা শুনতে খুবই বাজেভাবে নিহিলিস্টিক শোনায়। শোনার পর এটাও মনে হয় যে, যেহেতু সে এন্টি-হিরো, যেহেতু তার অবস্থান খারাপের পক্ষে, সেহেতু সে এমন কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যারা […]
মৃত্যুর ব্যক্তিরূপ
সাহিত্যে পারসোনিফিকেশন বলে একটা কথা আছে। কোন বস্তু কিংবা বিমূর্ত ব্যাপারকে ব্যক্তিরূপ দান করে তাকে একটা চরিত্র হিসেবে গল্পে তুলে ধরাকে পারসোনিফিকেশন বলা হয়। এযাবতকালে, মিথলোজি, শিল্প, সাহিত্য আর পপ কালচারে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং যে বিমূর্ত ব্যাপারটাকে পারসোনিফাইড করা হয়েছে সেটা হল মৃত্যু। ১৯৫৭ সালে সুইডিশ পরিচালক ইংমার বার্গম্যান পরিচালিত সিনেমা ‘দ্যা সেভেন্থ সিল’ মৃত্যুকে পারসোনিফাই […]