নো পেইন্টিং

কোন রং-তুলির আঁকিবুঁকি নয় যাহা আছে তাহা তাহাই থাক পাখিরা গান গেয়ে যাচ্ছে আসমান থেকে জলধারা এসে গিলে খাচ্ছে মৎসদের মঞ্চস্থ হচ্ছে নাটক নাটকের নাম “আমরা” নাটক চলছে, নাট্যশালায় আলসেমি যত গভীরেই যাওয়া যায় কখনই খুঁজে পাওয়া যায় না ‘আমি’ বলতে কিছুই। তর্জমা © শরিফুল ইসলাম নভেম্বর ০৪, ২০১৬। [পার নিয়েলসেন —নো পেইন্টিং]

আমার ভয় হয় একটা শরীরের অধিকারী হতে—

আমার ভয় হয় একটা শরীরের অধিকারী হতে— ভয় করে একটা আত্মার ভার নিতেও— অগাধ — বিপদজনক সম্পত্তি— মালিকানা — ঐচ্ছিক নয়— জোড়া সম্পদ — লিখে দেয়া হয়েছে একজন সন্দেহাতীত উত্তরাধিকারের ভোগে— একজন নৃপতি, অমরত্বের একটা মুহূর্তে এবং ঈশ্বর, একটা সীমান্তে। তর্জমা © শরিফুল ইসলাম এপ্রিল ০৭, ২০১৭। [এমিলি ডিকিনসন]

লাইসেন্স

গাড়োয়ান আবু ছিলো খুবই কেতাদুরস্থ এবং তাঁর গাড়িটা ছিলো শহরের এক নম্বর গাড়ি। সে কেবল নিয়মিত যাত্রীদেরই তাঁর গাড়িতে নিতো। এখান থেকে তাঁর প্রতিদিন গড়ে আয় হতো দশ থেকে পনের রুপি, আর এই টাকাতেই তাঁর দিব্যি দিন চলে যেতো। অন্যসব গাড়োয়ানদের মত মদের প্রতি তাঁর কোন ঝোঁক ছিলো না, কিন্তু ফ্যাশনের প্রতি তাঁর একটা দুর্বলতা […]

হারিয়ে যাওয়া রাস্তা

মার্ক জিরনডিন সিটি হলের প্রকৌশলী বিভাগের নথি সংরক্ষণ সেকশনে এত দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেছে যে পুরো শহরটা একটা মানচিত্রের মত তাঁর মনের ভিতরে অধিশায়িত ছিলো। শহরের প্রতিটা জায়গা, আনাচ-কানাচ, রাস্তাঘাট, কানা গলি আর চিপা গলি সবই ছিলো তাঁর মুখস্থ। পুরো মন্ট্রিয়ালে শহর সম্পর্কিত এত জ্ঞান তাঁর মত আর কেউ রাখতো না। ডজন খানেক পুলিশ আর […]

দশ রুপি

দূরে গলিটার শেষ মাথায় বাচ্চা মেয়েগুলোর সাথে সে খেলছিলো। চালির ভিতরে আনাচে-কানাচে তাঁর মা তাঁকে পাগলের মতো করে খুঁজলো। কিশোরী তাঁদের ঘরে বসে অপেক্ষা করছিলো, কেউ একজন তাঁর জন্যে চা আনতে গেছে। সারিতার মা এখন চালির পুরো তিনটা তলাতেই সারিতাকে খোঁজা শুরু করে দিলো। কে জানে, সারিতা কোন খুপরিতে গিয়ে মরে পড়ে আছে? সে এমনকি […]

গন্ধ

সেদিনও বৃষ্টি হচ্ছিলো—আজকের মতই। জানালার বাইরে, একইভাবে অশ্বথ গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে সিক্ত হয়ে চিকচিক করছিলো—যেমনটা করছে আজকেও। সেগুন কাঠের সেই খাটটায়, যেটাকে এখন জানালা থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে আনা হয়েছে, সেখানে রান্ধিরের গায়ে নাক চাপা দিয়ে শুয়ে ছিলো একটা মারাঠি মেয়ে। জানালার বাইরে, অশ্বথ গাছের পাতাগুলো লম্বা কানের দুলের মত ধিকিধিকি কাঁপছিলো রাতের ধূসর […]

‘আমি’ দর্শন

আমাদের সবারই যেন দুইটা ‘আমি’ আছে। একটা আমি (I), আরেকটা আমি (Me)। প্রথম ‘আমি’টার সাথে দ্বিতীয় ‘আমি’র সম্পর্ক সম্ভবত খুব একটা ভালো না। প্রায় খারাপই বলা যায়। প্রথম ‘আমি’টা নিজেরে নিয়া সবসময় কনশাস থাকে। অন্তত থাকার ভান কইরা যায়। এই আমি (I) টা কনশাস হইলেও, সে সবসময় একটা হঠাৎ বন্ধি হইয়া পড়া প্রাণীর মতই কনফিউজড […]

ব্লাউজ

মমিন গত কয়েকদিন যাবত এক ধরণের অস্থিরতায় ভুগছে। তাঁর পুরো শরীরটা যেন একটা দগদগে বিষফোঁড়া। সর্বদা সে একটা রহস্যজনক ব্যথা অনুভব করে —কাজ করতে গেলে, হাঁটতে গেলে, এমনকি চিন্তা করতে গেলেও ব্যথাটা তাঁর অনুভূত হয়। যতবারই সে এই অনুভূতিটাকে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছে, ততবারই ব্যর্থ হয়েছে। বসে থাকা অবস্থায় মাঝে মাঝে সে ব্যথাটার একটা ব্যাখ্যা দাঁড় […]

প্রতিধ্বনি

আমি জানি আমি গুপ্তধন খুজছিলাম পুকুরের স্বচ্ছ জলে যখন তোমার মুখ… যখন তোমার মুখটি যেন কুয়োয় প্রতিফলিত চাঁদ। যেখানে আমার ইচ্ছে… যেখানে খুব ইচ্ছে পুষি তোমার চুমুর হিমশীতল অগ্নি ছোঁয়ার শুধু আমার ঠোঁটের জলে যেখানে তোমার মুখ… যেখানে তোমার মুখের ছবির প্রতিফলন হয়, প্রাণবন্ত! ঠিক সেখানে নয়, যখন আমি পেছন ফিরে দেখি শূন্য হাওয়া। সেই […]

সোসাইটির ডিভাইস, ডিভাইড এন্ড রুল, আর সাফল্যের দৌড় — আপনি কোথায়?

সোসাইটি একজন ইনডিভিজুয়ালরে এত সব অভিনব পন্থায় শোষণ কইরা থাকে যে কেউ একজন আসলেই শোষিত হইতেছে কিনা, এবং হইলে কিভাবে হইতেছে সেইটা ডিটেক্ট করা প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার হইয়া দাঁড়ায়। মানুষরে শোষণ করার লাইগা সোসাইটি অনেকগুলা ডিভাইস তৈরি কইরা রাখছে। এইসব ডিভাইস দিয়া সমাজ প্রথমেই একজন মানুষের ভেতরের শুদ্ধতা কাইড়া নেয়, তারপর জন্মগতভাবে একজন মানুষ […]