গ্রিক মিথোলজির রাজা থেসিয়াস বিখ্যাত হয়েছিলেন মিনোয়ার ক্রিটের পৌরাণিক জন্তু মিনোয়াতোরকে হত্যা করে। মিনোয়াতোর ছিলেন অর্ধেক মানুষ আর অর্ধেক ষাঁড়াকৃতির এক প্রাণী। থেসিয়াস মিনোয়ার থেকে মিশন শেষে যে জাহাজে করে এথেন্সে ফিরেছিলেন সেই বিখ্যাত জাহাজকে বলা হয় ‘শিপ অফ থেসিয়াস’। মিশন পরবর্তী সময়ে জাহাজখানাকে গ্রিসের একটা বন্দরে মেমোরিয়াল হিসেবে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিলো। সংরক্ষণের পর […]
Category: দর্শন
লুসিয়া
চাইনিজ দার্শনিক চুয়াং জু একবার স্বপ্নে দেখলেন যে তিনি একটা প্রজাপতি হয়ে মনের আনন্দে ফুলে ফুলে উড়ে বেড়াচ্ছেন। স্বপ্নের মধ্যে প্রজাপতিটা জানতো না যে এটা আসলে চুয়াং জু স্বপ্ন দেখছেন যে উনি একটা প্রজাপতি। কিছুক্ষণ পর তার ঘুম ভেঙে গেল। জেগে উঠে তিনি দ্বিধান্বিত হয়ে গেলেন এই ভেবে যে ‘আমি চুয়াং জু স্বপ্ন দেখলাম যে […]
মিডসোমার
মনুষ্যমনের আদিম এক কল্পনা হল স্বর্গ। একটা চির আকাঙ্ক্ষিত জায়গা। তবে এটা কোন জায়গা না হয়ে কেবল একটা মানসিক অবস্থান হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু মানুষের মন এ ব্যাপারে নিজের ক্রেডিট নিতে খুব একটা রাজি না, যেখানে তার নিজের সাথে নিজের পরিচয় খুবই ক্ষীণ। তাই গড়পড়তায় মানুষ স্বর্গকে একটা জায়গা হিসেবেই দেখে। এমন একটা জায়গা যেখানে […]
ঈশ্বরের কোন বৈশিষ্ট্য নেই
মানুষ ঈশ্বরে বিশ্বাস করে। ঈশ্বরকে সে নিজের থেকে কিংবা অন্য সবকিছু থেকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে মেনে নেয়। কিন্তু ঈশ্বর কী? ঈশ্বর কেমন? ঈশ্বর কেমন সেটা ভাবতে গেলে মানুষ তাকে নররূপেই চিন্তা করে। ঈশ্বরের রূপকেও মানুষ মনুষ্যরূপের বাইরে চিন্তা করতে পারে না। দার্শনিক মাইমোনিডিস মানুষের এই চিন্তার ঘোর বিরোধী ছিলেন। মাইমোনিডিস তৎকালে হিব্রু ভাষায় ইহুদি আইন এবং […]
অস্তিত্বের চূড়ান্ত উদ্বেগ
১ মৃত্যু – সবচাইতে স্পষ্ট, সহজেই ধরা যায়, বোঝা যায় এমন এক চূড়ান্ত উদ্বেগ। আমরা এই আছি এখন এখানে, কিন্তু একদিন আর থাকবো না। মৃত্যু আসবে, এটা থেকে পালানোর কোন উপায় নাই। এটা একটা ভয়ংকর সত্য, যে সত্যের মুখের দিকে আমরা সহজে তাকাতে চাই না। স্পিনোজা বলেছিলেন, ‘সবকিছুই তার নিজের সত্তায় টিকে থাকতে চায়’ আর […]
মানুষ একটা মেশিন
যদিও থমাস হবস মূলত তার রাজনৈতিক দর্শনের জন্য সুপরিচিত, আন্যান্য বিষয়ে তার লেখার পরিমাণও কম নয়। তার বেশীরভাগ চিন্তাধারাই বিতর্কিত, এর মধ্যে রয়েছে ফিজিক্যালিজমের পক্ষে তার জোর গলার সাফাই—যে তত্ত্বানুসারে বলা হয় যে জগতের সবকিছুই শারীরিক, এখানে শরীর ব্যতিত অন্য কোন অস্তিত্ব, যেমন মন অথবা অতিপ্রাকৃতিক কোন সত্তার জায়গা নেই। হবসের মতে, মানুষ সহ সকল […]
ইরাসমাসঃ বোকারাই সবচাইতে সুখী
১৫০৯ সালে লেখা আলোচনা-গ্রন্থ ‘প্রেইজ অব ফলি’-তে ইরাসমাস কিছু মানবতাবাদী ধারনা তুলে ধরেছিলেন যা গোটা ইউরোপ জুরে ছড়িয়ে পড়েছিল নবজাগরণের শুরুর দিকের বছরগুলোতে এবং যা সংস্কার সাধনে পালন করেছিল এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বইটা মূলত ক্যাথোলিক চার্চের দুর্নীতি আর মতবাদের দ্বন্দ্বের উপর করা হাস্য রসাত্মক বিদ্রুপ। তবে বইটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও বহন করে—যেখানে ইরাসমাস উল্লেখ করেন […]
প্রোটাগোরাসঃ মানুষই সবকিছুর মাপকাঠি
খ্রিস্টপূর্ব পাঁচ শতাব্দীর দিকে পেরিক্লিসের নেতৃত্বে পাণ্ডিত্য আর শিক্ষার এক ‘সোনালি দিন’-এ প্রবেশকারী শহর এথেন্স হয়ে উঠেছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী নগর-রাজ্য। গ্রীসের নানান জায়গা থেকে লোকজন তখন আসা শুরু করেছিল সেখানে। এদের মধ্যে যারা সেখানকার আইন বুঝতো এবং সেটাকে ব্যাখ্যা করতে পারতো, তাদের জন্য এই শহরটা ছিল ভালো একটা উপরি আয়ের জায়গা। প্রতিষ্ঠিত একটা […]
মন্টেইনঃ খ্যাতি আর মানসিক প্রশান্তি কখনই শয্যাসঙ্গী হতে পারে না
মন্টেইন তার প্রথমদিককার লেখা প্রবন্ধ ‘অন সলিটিউড’-এ জনপ্রিয় প্রাচীন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন, সেটা হলঃ অন্যদের ভিড়ে বাঁচার নৈতিক এবং বুদ্ধিগত বিপদ, এবং নির্জনতার মূল্য। নির্জনতার কথা বলতে গিয়ে মন্টেইন শারীরিক নির্জনতার উপর জোর দেননি, বরং আপামর জনগণের মতামত আর কর্মকাণ্ডে নির্বোধভাবে নিজেকে ছেড়ে দেয়ার আকর্ষণীয় লোভকে সংযত করার ক্ষমতা অর্জনের কথা গুরুত্বের সাথে […]
এপিকিউরাসঃ মৃত্যুকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই
প্লেটো আর অ্যারিস্টটলের চিন্তা যখন ইতোমধ্যে প্রাচীন গ্রীস দর্শনের চূড়ায়, তখন জন্ম হয়েছিলো এপিকিউরাসের। দার্শনিক চিন্তার মূল ফোকাস তখন অধ্যাত্মতত্ব থেকে সরে যাচ্ছিলো নীতিশাস্ত্রের দিকে—রাজনৈতিক নীতিশাস্ত্র থেকে ব্যক্তিগত নীতিশাস্ত্রের দিকে। যাইহোক, পূর্ববর্তী দার্শনিকদের অনুসন্ধান, যেমন মানুষের মৌলিক ধ্যান-ধারণা এবং মূল্যবোধের সত্যকে পরখ করা নিয়ে সক্রেটিসের চিন্তায় এপিকিউরাস খুঁজে পেয়েছিলেন নতুন চিন্তার বীজ। মানুষের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য […]