সভ্যতা

বেশ্যার পায়ের কাছে পড়ে থাকে সভ্যতা নীরব, নিস্তব্দ, শূন্য জোড়া চোখ তিরতির কাঁপা জোড়া ঠোঁট নিথর জোড়া পা বাঁকা অবয়ব। থেকে থেকে মাটিতে মাথা ঠুকে সভ্যতা চাপা কান্না জুরে দেয়, কি এক আশ্চর্য যন্ত্রণায় পার হয়ে যায় শতাব্দী পর শতাব্দী, কিন্তু তার মুক্তি মেলে না বেশ্যার পদধূলি থেকে। সভ্যতার বন্ধিত্বে থেমে থাকে স্রোতস্বিনীর স্রোত, দাঁড়িয়ে […]

শিহরণ

নিঃশ্বাসের উপর ভর করে আমি হেঁটে যাই তোমার কাছে। স্কুল জীবনে শিরিনের সদ্য ফোলা বুকের উপর প্রথম চোখ পড়তেই যে শিহরণ জেগেছিল মনে ঠিক সেরকম একটা অনুভূতি আমার অস্তিত্ব ছেয়ে ফেলে তুমি দৃষ্টিগোচর হলে। রক্ত কণিকার উপর ভর করে আমি ভেসে যাই তোমার কাছে। মায়ের পুরনো শাড়ি কেটে লেজ বানিয়ে প্রথম যেদিন আকাশে সাপ ঘুড়ি […]

নিষিদ্ধ অবয়ব

থেকে থেকে একটা নিষিদ্ধ যাতনা কাঁপুনি ধরায় আমার হৃদপিণ্ডে। দীর্ঘ যাতনার ক্লান্তিতে একটা সময় সেখানে নেমে আসে নিষিদ্ধ প্রশান্তি। এভাবে শতাব্দী পার হয় ঝুলে থাকে এক নিষিদ্ধ অনুভূতি। যন্ত্রণায় নীল হয়ে যাওয়া পা ফেলি আমি নিষিদ্ধ ভূমিতে। প্রচণ্ড খিদেয় গিলে খাই নিষিদ্ধ গাছের নিষিদ্ধ ফল, শত বছর অপেক্ষারত আমার তৃষ্ণার্ত চোখ ― প্রথম বারের মত […]

হাইকু সমগ্র

১ গহীন অরণ্য, একটা নিঃসঙ্গ অগ্ন্যুত্সব বিম্বিত হয় পাতায় পাতায়। ২ আমার অঙ্কুরিত বীজ, নগ্ন পায়ে আমি ধরণী চষে বেড়িয়েছি খুঁজেছি তোমার উর্বরতা, রোপণ করব বলে। ৩ চোখের পাতায় ঘুম নামে, মৃত্যু নামে নামে তোমাকে দেখার অপূরণীয় স্বপ্ন। ৪ তুমি পদ্ম হও জলে থাকো কিন্তু তৃষ্ণার্ত জল কখনই ছুঁতে পারে না তোমাকে। ৫ পাথরের নিঃশ্বাস, […]

কি দেব তোমায়?

ভেবেছি একটা উপহার দেব তোমাকে— আমি ধরণীর বুকে তন্নতন্ন করে খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি কিছুই। কি দেব, কি দেব, কি দেব তোমায়? সোনা নিয়ে সোনার খনির কাছে গিয়ে কি লাভ, বল? কিংবা জল নিয়ে সমুদ্রের কাছে? আমি ব্রহ্মাণ্ড উপড়ে ফেলেছি খুঁজতে গিয়ে, কিন্তু পাইনি কিছুই। কি দেব, কি দেব, কি দেব তোমায়? আমার হৃদপিণ্ড? আমার আত্মা? […]

তোমার পাশাপাশি শুয়ে ঘুমুতে চাই

আমি তোমার পাশাপাশি শুয়ে ঘুমুতে চাই, গিঁট লেগে থাকবে তোমার-আমার চুলে। একীভূত আমাদের অঙ্গ দুটো, বালিশে রূপ নেবে তোমার মাথা। আমি তোমার পিঠাপিঠি হয়ে ঘুমুতে চাই, নিঃশ্বাসহীন একত্বতা। কোন শব্দ নেই আমাদের অন্যমনস্ক করার, কোন চক্ষু নেই মিথ্যা বলার, কোন বস্ত্র নেই কৃত্রিমতার। আমি তোমার বুকে বুক মিশিয়ে ঘুমুতে চাই, চাপা উত্তেজনায় ঘর্মাক্ত, হাজারো কাঁপুনির […]

মুখ

তোমার কারণে আমি হয়েছি এক উল্কাপিণ্ড, আমি ধেয়ে যাই আকাশপানে, যেথায় তোমার বাস, এখন তুমি চাইলে অবজ্ঞায় ফিরিয়ে দিতে পারো আমায় অথবা দেখেও করতে পারো না দেখার ভান। কিন্তু আমার স্ফুলিঙ্গ – প্রজ্বলিত হবেই তোমার মুখ, তুমি চাইলেও লুকোতে পারবে না, পারবে না ঢেকে রাখতে তোমার গাঢ় নীলে পুঞ্জিভূত সৌন্দর্য। শরিফুল ইসলাম মে ০৭, ২০১৮

আয়না চোর

তোমার একটা আয়না আমি চুরি করেছি – তুমি বলতে পারো, ‘চাইলেই পারতে, আমি দিয়ে দিতাম।’ কিন্তু না – এই আয়নার সৃষ্টি হয়েছে শুধু চুরি হওয়ার জন্য। আমি বুঝে গেছি কালান্তরে আমিই এটাকে চুরি করব বারবার। আমি আয়না দেখি। সকাল, বিকাল, রাতে। আমার সবক’টা যুক্তির ঘর ভেঙ্গে চুরমার হয়। আমি দেখি – একটা পরাবাস্তব সীমাহীন ছোট্ট […]

অ-ঈশ্বর

একশো সতেরটা জনম পার করার পর আমি আটকা পড়েছি আঠারোতে, সেও অর্ধ শতাব্দী আগের কথা। পুনর্জন্মের তৃষ্ণায় আমার আত্মা ফেটে এখন চৌচির। থমকে গেছে জন্মান্তরের উড়ন্ত পাল। নিস্তব্দ। সময়ের জরায়ুতে এখন আর উর্বরতা নেই। সূর্যটাও স্থির। চারিদিকে বিস্তীর্ণ আলোর জাল। আছে আত্মা জ্বালা করা তাপ। তবে আলোর ফোটনগুলো সব আমার মতই তৃষ্ণার্ত। ঢেউ নেই, ঢেউ […]

অর্ধেক জীবন

জীবনের পথে আমি হেঁটে বেড়িয়েছি অর্ধেক, অর্ধেক পিয়েছি জল।   এ যেন জ্বরের ঘোরে দেখা স্বপ্নের মধ্যে হাঁটাহাঁটি, সহস্র মাইল হেঁটেও পা ছুঁতে পারে না মাটি।   অর্ধেক খোলা চোখ অর্ধেক রুদ্ধ হৃদয় নিজেকে নিয়ে অর্ধেক জানাজানি অর্ধেক বলা কথা   নিজেকে অর্ধেক দেখি ভূত দেখার মত অর্ধেক দেখি তোমাকে, অর্ধেক মানুষ হয়ে ঘুরে বেড়াই […]