পায়ের তলের মাটিআর গগন চড়া ঈশ্বরদুটোই যখন নাই হয়ে যায়,বাতাসে কি তখন আধ্যাত্মিকসংশয়ের গন্ধ ভাসে? এংজাইটির ইথারেঅনিশ্চয়তার তীব্রতা।কী এক অব্যাখ্য ব্যথায়কুকঁড়ে উঠে নাক-মুখ-মন। তবুও কোন একআকস্মিকবৈকালিক হাওয়ায়হঠাৎ আত্মা শীতল হয়।মুহূর্তে বিলীন হয়অস্তিত্বের সব অর্থহীনতারপ্রশ্নসমূহ।
Category: কবিতা
এবার তুমি ডেকো
এবার তুমি ডেকোনাম ধরে কিংবা না ধরেই,একটা হাঁক দিওএমন আওয়াজেযেন হাত-পা না থেকেওআমি ছুটে যেতে পারিতোমার কাছে। এবার তুমি হেসোনির্মল, সিডাকশনহীনএকটা সত্য ঝিলমিল করবেতোমার ঠোঁটের কোণে। এবার তুমি কেঁদোদুই কিংবা আড়াই ফোটাজল গড়াতে দিও কপোলে,যে জলে বিম্বিত হবেআমার দুঃখী-বোকামুখখানা। এবার তুমি এঁকোআমার ক্ষণস্থায়ী অবয়ব,পাঁজরে চামড়া বসানোর আগেতোমার হাতের সুবাস মিশ্রিতএকটা আমি বসিয়ে দিওভেতরে। আর শুধুঅনুভব […]
মহাপ্রলয়
ভাবতামএমন একটা আঁধার-কালো দিনেইমহাপ্রলয় হবে। এমন একটা দিনযেদিন আকাশ থেকে বিরামহীন বিষণ্ণতারজল ঝরবে থেমে থেমেহুহু বাতাস বইবে দীর্ঘশ্বাসের মতক্ষণে ক্ষণে হেঁচকি দিয়েজগতের গলা ফুলে বেরুবে কান্না। ভাবতাম নাআমার আয়ু এত অল্প যেতা মহাপ্রলয় পর্যন্ত গড়াবে না।কেবল মনে হতোআমার জীবনের অবসান হবেসেই দিনেই।উৎকণ্ঠায়জড়িয়ে ধরতাম মা’কে।চোখে ভাসতোজল ফুলছে চারিদিকে। হাই ওয়াটারহাই ওয়াটার এমন একটা দিনযেদিন কিছু তো […]
ডাইলেমা
মাটির গন্ধ শুঁকেই আমি তোমাকে চিনেছিলাম। তুমি যে মাটিই হতে পারো তা বুঝতে আমার কতকাল পেরিয়ে গেলো দেখো তো! যেদিন তোমাকে নিয়ে গেলাম কুমোরের কাছে, তোমার দেহ দিয়ে ফুলদানী বানাবো নাকি সানকি সেই সিদ্ধান্ত আমি কিছুতেই নিতে পারছিলাম না। কুমোরের কত জেনারেশন কতবার সিদ্ধান্ত নিতে এসে ফিরে গেছে আমার জানা নেই। একদিন আমি তখনও […]
মেটামরফোসিস
কতবারই তো মরলাম জন্মেছিও কতবার তবুও কে যেন ভেতরে নিখাদ ভয়ের সুতো দিয়ে নীরবে গেঁথে যাচ্ছে এক অদৃশ্য অহং। যা ঠিকঠাক মরেও না বাঁচেও না। এত ভয় এত ভার সংশয় নৈরাশ্য কে বহন করে যাচ্ছে এসব? কও তো! কোথায় মিলিয়ে গেছে সকলঃ ঐশ্বরিক জাগতিক প্রাকৃতিক যান্ত্রিক বৈরাগী সাংসারিক প্রতিজ্ঞার বিকিরণ? হ্যাঁ, শুনেছি কিছুই নেই। কেবল […]
তোমার ঐশ্বর্য, আমার জাগতিক নস্টালজিয়া
আমি ভুলে গেছি পরজন্মের কথা, যেখানে আমার হারিকেন হয়ে মিটিমিটি জ্বলার কথা ঈশ্বরের আঁতুড় ঘরে। অথবা অগণিত দুঃখের জরায়ুতে মেদ হয়ে আটকে দেয়ার কথা জোড়া ফেলোপিয়ান নালীর পথঃ অন্তহীন যৌনতার অবাধ আনন্দে দুঃখটা কুঁচকে রাখতো মুখ—চিরস্থায়ী বন্ধ্যাত্বে। অথবা অশরীরী হয়ে ডোবার জলের মাছেদের কাছে আমার বলে দেয়ার কথা নদী আর সমুদ্র জলে মিশে থাকা হীনমন্যতার […]
দি ড্রাগ
শইল্যে আর সয় না মনে কি সয়? আত্মায়? শেফালির মা’র দেহ গ্লানি, মনোগ্লানি— কত ভার সংসারের? দার্শনিকের এত গ্লানি, যন্ত্রণায়— কত ভার চেতনের? সিনেটরের দীর্ঘ মুখ ঝুলে পড়ে অনিচ্ছায়— কত ভার গাম্ভীর্যের? আঁখিজলে ধর্মযাজক কপোল ভাসে অনুশোচনায়— কত ভার আদিপাপের? তবুও সয় সয় লো—এই জগতের ভার। একটু যে সুখ, একটা যে নেশা জীবনের।
মেরুসঙ্গম
ধরো তুমি উত্তর আর আমি দক্ষিণ যখন প্রবেশ করি তোমার ভেতর— আমি ভুলে যাই ঈশ্বরের কথা, অথবা ঈশ্বর ভুলে যান নিজের কথা। শরীর থেকে খসে পড়লে ঐশ্বরিক বসন, আমি হয়ে উঠি এক পূর্ণ মানব। সাক্ষাৎ হয় উত্তর আর দক্ষিণ মেরুতে। ধরো তুমি উত্তর আর আমি দক্ষিণ যখন প্রবেশ করি তোমার ভেতর— তুমি আর তুমি থাকো […]
অ-মৃত্যু
আমাকে ভেঙ্গে পড়তে দাও, আর কত শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকার শাস্তি দেবে আমায়? সৌন্দর্যের পদতলে দলিত মথিত হোক আমার অহং। আমাকে গলে যেতে দাও, শক্ত হয়ে থাকার ভার আমি আর কত বইব, বলো? এক আঁজলা প্রেমেই গলে বেয়ে সমুদ্রে নেমে যাক আমার অহং। আমাকে মরে যেতে দাও, বেঁচে থাকার ভান করে করে আমি কি […]
একা
যখন আমাকে দেখো তুমি একা লাগে না? যেন শীতের দুপুরে আমি কুণ্ডলী পাকানো কুয়াশা, আমার কারণে সূর্যের সঙ্গবিহীন দুপুরটার যেমন একা লাগে। পুকুরের জলে একটা আস্ত নদী এনে ডুবিয়ে দিলে জলের শরীর বেড়ে যেমন গাঢ় হবে পুকুরের একাকীত্ব— তেমনি আমি তোমাতে ডুবলেও কি তোমার একা লাগবে না? গভীর ধ্যানে আমার মনযোগের নিরবিচ্ছিন্নতায় যখন নিঃশ্বাসটা একা […]