Picture2

মূর্খরাই সবচাইতে সুখী

রেনেসাঁর বছরগুলোতে পুরো ইউরোপ জুরে কিছু মানবতাবাদী মতবাদের বন্যা বইছিলো। ১৫০৯ সালে লেখা  দার্শনিক ডেসিডেরিয়াস ইরাসমাসের ‘ইন প্রেইজ অফ ফলি’ বইতে এইসব মতবাদের প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছিলো, যা তৎকালে সংস্কারের ক্ষেত্রে  পালন করেছিলো অনেক বড় ভূমিকা। বইটা ছিল মূলত ক্যাথোলিক চার্চের কট্টরপন্থী আচরণ আর দুর্নীতিকে ইঙ্গিত করে লেখা এক ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ। তবে এই বই বিদ্রুপ ছাড়াও আরেক […]

Picture2

অস্তিত্বের চূড়ান্ত উদ্বেগ

১ মৃত্যু – সবচাইতে স্পষ্ট, সহজেই ধরা যায়, বোঝা যায় এমন এক চূড়ান্ত উদ্বেগ। আমরা এই আছি এখন এখানে, কিন্তু একদিন আর থাকবো না। মৃত্যু আসবে, এটা থেকে পালানোর কোন উপায় নাই। এটা একটা ভয়ংকর সত্য, যে সত্যের মুখের দিকে আমরা সহজে তাকাতে চাই না। স্পিনোজা বলেছিলেন, ‘সবকিছুই তার নিজের সত্তায় টিকে থাকতে চায়’ আর […]

Picture2

মানুষ একটা মেশিন

যদিও থমাস হবস মূলত তার রাজনৈতিক দর্শনের জন্য সুপরিচিত, আন্যান্য বিষয়ে তার লেখার পরিমাণও কম নয়। তার বেশীরভাগ চিন্তাধারাই বিতর্কিত, এর মধ্যে রয়েছে ফিজিক্যালিজমের পক্ষে তার জোর গলার সাফাই—যে তত্ত্বানুসারে বলা হয় যে জগতের সবকিছুই শারীরিক, এখানে শরীর ব্যতিত অন্য কোন অস্তিত্ব, যেমন মন অথবা অতিপ্রাকৃতিক কোন সত্তার জায়গা নেই। হবসের মতে, মানুষ সহ সকল […]

erastus

ইরাসমাসঃ বোকারাই সবচাইতে সুখী

১৫০৯ সালে লেখা আলোচনা-গ্রন্থ ‘প্রেইজ অব ফলি’-তে ইরাসমাস কিছু মানবতাবাদী ধারনা তুলে ধরেছিলেন যা গোটা ইউরোপ জুরে ছড়িয়ে পড়েছিল নবজাগরণের শুরুর দিকের বছরগুলোতে এবং যা সংস্কার সাধনে পালন করেছিল এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বইটা মূলত ক্যাথোলিক চার্চের দুর্নীতি আর মতবাদের দ্বন্দ্বের উপর করা হাস্য রসাত্মক বিদ্রুপ। তবে বইটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও বহন করে—যেখানে ইরাসমাস উল্লেখ করেন […]

prota

প্রোটাগোরাসঃ মানুষই সবকিছুর মাপকাঠি

খ্রিস্টপূর্ব পাঁচ শতাব্দীর দিকে পেরিক্লিসের নেতৃত্বে পাণ্ডিত্য আর শিক্ষার এক ‘সোনালি দিন’-এ প্রবেশকারী শহর এথেন্স হয়ে উঠেছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী নগর-রাজ্য। গ্রীসের নানান জায়গা থেকে লোকজন তখন আসা শুরু করেছিল সেখানে। এদের মধ্যে যারা সেখানকার আইন বুঝতো এবং সেটাকে ব্যাখ্যা করতে পারতো, তাদের জন্য এই শহরটা ছিল ভালো একটা উপরি আয়ের জায়গা। প্রতিষ্ঠিত একটা […]

montaign cover

মন্টেইনঃ খ্যাতি আর মানসিক প্রশান্তি কখনই শয্যাসঙ্গী হতে পারে না

মন্টেইন তার প্রথমদিককার লেখা প্রবন্ধ ‘অন সলিটিউড’-এ জনপ্রিয় প্রাচীন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন, সেটা হলঃ অন্যদের ভিড়ে বাঁচার নৈতিক এবং বুদ্ধিগত বিপদ, এবং নির্জনতার মূল্য। নির্জনতার কথা বলতে গিয়ে মন্টেইন শারীরিক নির্জনতার উপর জোর দেননি, বরং আপামর জনগণের মতামত আর কর্মকাণ্ডে নির্বোধভাবে নিজেকে ছেড়ে দেয়ার আকর্ষণীয় লোভকে সংযত করার ক্ষমতা অর্জনের কথা গুরুত্বের সাথে […]

epicu

এপিকিউরাসঃ মৃত্যুকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই

প্লেটো আর অ্যারিস্টটলের চিন্তা যখন ইতোমধ্যে প্রাচীন গ্রীস দর্শনের চূড়ায়, তখন জন্ম হয়েছিলো এপিকিউরাসের। দার্শনিক চিন্তার মূল ফোকাস তখন অধ্যাত্মতত্ব থেকে সরে যাচ্ছিলো নীতিশাস্ত্রের দিকে—রাজনৈতিক নীতিশাস্ত্র থেকে ব্যক্তিগত নীতিশাস্ত্রের দিকে। যাইহোক, পূর্ববর্তী দার্শনিকদের অনুসন্ধান, যেমন মানুষের মৌলিক ধ্যান-ধারণা এবং মূল্যবোধের সত্যকে পরখ করা নিয়ে সক্রেটিসের চিন্তায় এপিকিউরাস খুঁজে পেয়েছিলেন নতুন চিন্তার বীজ। মানুষের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য […]

zeno

জিনোঃ জীবনের লক্ষ্য হল প্রকৃতির সাথে এক হয়ে বাঁচা

অ্যারিস্টটলের মৃত্যুর পর পশ্চিমা দর্শনে দুটি প্রধান দার্শনিক চিন্তার স্কুলের আবির্ভাব হয়েছিলো। একটা ছিল এপিকিউরাসের ঈশ্বরহীন আনন্দবাদী নীতি—যেটা লোকের কাছে খুব একটা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি, আর আরেকটা ছিল জিনো অফ সিটিয়াম-এর জনপ্রিয় এবং দীর্ঘ মেয়াদী নিঃস্পৃহবাদ। জিনো ডাইয়োজিনিস-এর অনুসারী সিনিকদের সাথে পড়ালেখা করেছিলেন—যেখানে তিনি ব্যক্ত করেছিলেন জীবনের প্রতি তার বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কথা। আধ্যাত্মিক জল্পনা-কল্পনায় তার ধৈর্য […]

dio

ডাইয়োজিনিসঃ অল্পতে যে তুষ্ট সেই ধনী

ডাইয়োজিনিসের কথা বলতে গিয়ে প্লেটো একবার বলেছিলেন, “সে হল পাগল হয়ে যাওয়া সক্রেটিস।” যদিও কথাটা উনি বলেছিলেন অপমান করার উদ্দেশ্যে, কিন্তু কথাটা খুব একটা মিথ্যা না। সক্রেটিসের মত ভালো কাজ করা এবং জাগতিক আরাম-আয়েশকে প্রত্যাখ্যান করার অনুরাগ ডাইয়োজিনিসেরও ছিল, কিন্তু ডাইয়োজিনিস সেটাকে নিয়ে গিয়েছিলেন চরম পর্যায়ে। তার মতে, একটা ভালো কিংবা বাঁচার যোগ্য জীবন যাপন […]

atom

ডেমোক্রিটাস এবং লিওকিপাসঃ অস্তিত্বে শূন্য আর পরমাণু ছাড়া কিছু নেই

ব্রহ্মাণ্ড কি একটা একক মৌলিক উপাদান থেকে তৈরি কিনা সেটা নিয়ে দার্শনিকরা ভাবা শুরু করেছিলেন খ্রিস্টপূর্ব ছয় শতাব্দীর পর থেকে। পঞ্চম শতাব্দীর দিকে, গ্রীসের এবডেরা থেকে ডেমোক্রিটাস এবং লিওকিপাস নামে দু’জন দার্শনিক বললেন যে, ব্রহ্মাণ্ডের সবকিছু একটা ক্ষুদ্র, অদৃশ্য এবং অপরিবর্তনীয় কণা দ্বারা তৈরি, যার নাম উনারা দিয়েছিলেন পরমাণু। প্রথম পরমাণু থিওরি ডেমোক্রিটাস এবং লিওকিপাস […]