একবার এক ব্যাঙ একটা শতপদী সেন্টিপিডরে জিগাইল, “ভাই, তুমি এই একশোটা পাও নিয়া কিভাবে এত সুন্দর কইরা হাইটা বেড়াও? সাবলীল ভঙ্গীতে এতগুলা পাও সিঙ্করোনাইজ কইরা কিভাবে হাঁটো? কোন পায়ের আগে কোন পাওটা ফেলতে হয় সেই হিসাবটা কিভাবে রাখো? আমার তো দুইটা পাও ম্যানেজ করতেই বেগ পাইতে হয়!” সেন্টিপিড এই কথা শুইনা একটু চিন্তায় পইড়া গেল। […]
Category: অনুবাদ গল্প
এরাবি
নর্থ রিচমণ্ড সড়কটি ছিল নিঝুম একটা কানা গলি। শুধুমাত্র ক্রিশ্চিয়ান ব্রাদার্স স্কুলের ছুটির সময়টায় কিছুক্ষণের জন্য কোলাহলে জেগে উঠত গলিটা। তারপর আবার ডুবে যেত নির্জনতায়। গলির কানা মাথায় এক খণ্ড চৌকো জমিতে দাড়িয়ে ছিল একটা দোতলা বিচ্ছিন্ন বাড়ি, পরিত্যক্ত। নিজেদের ভেতরের বাস করা আভিজাত্যে সজাগ বাদ বাকি বাড়িগুলো বাদামি শান্ত চেহারা নিয়ে একে অন্যের দিকে […]
রাম খিলাভান
এইমাত্র একটা ছারপোকা মারলাম। একটা ট্রাঙ্কে কিছু পুরনো কাগজপত্র ঘাঁটছিলাম। সেখানেই হঠাৎ সাইয়িদ ভাইজানের একটা ফটো খুঁজে পেলাম। টেবিলের উপর পড়ে থাকা একটা খালি ফ্রেমে ভাইজানের ফটোটা গুঁজে দিয়ে চেয়ারে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম। ধোবি আসবে। প্রতি রবিবারেই আমি এভাবে বসে অপেক্ষা করি, কারণ সপ্তাহ শেষ হলেই আমার পরিষ্কার কাপড়ের সাপ্লাই ফুরিয়ে যায়। এটাকে ঠিক […]
এভেলিন
জানালার ধারে বসে সে দেখছিল এভিনিওতে সন্ধ্যা নামার দৃশ্যটা। তাঁর মাথাটা ঝুঁকে ছিল জানালার পর্দাগুলোর দিকে আর তাঁর নাসারন্ধ্রে লেগে ছিল ধূলিমলিন কাপড়ের গন্ধ। সে ছিল ক্লান্ত। কয়েকটা লোক অতিক্রম করে গেল। সর্বশেষ কুঠি থেকে বের হওয়া লোকটাও রওয়ানা দিল বাড়ির দিকে; শান বাঁধানো রাস্তায় হেঁটে চলা লোকটার পায়ের খটখট আওয়াজ ভেসে আসছিল তাঁর কানে, […]
লাইসেন্স
গাড়োয়ান আবু ছিলো খুবই কেতাদুরস্থ এবং তাঁর গাড়িটা ছিলো শহরের এক নম্বর গাড়ি। সে কেবল নিয়মিত যাত্রীদেরই তাঁর গাড়িতে নিতো। এখান থেকে তাঁর প্রতিদিন গড়ে আয় হতো দশ থেকে পনের রুপি, আর এই টাকাতেই তাঁর দিব্যি দিন চলে যেতো। অন্যসব গাড়োয়ানদের মত মদের প্রতি তাঁর কোন ঝোঁক ছিলো না, কিন্তু ফ্যাশনের প্রতি তাঁর একটা দুর্বলতা […]
হারিয়ে যাওয়া রাস্তা
মার্ক জিরনডিন সিটি হলের প্রকৌশলী বিভাগের নথি সংরক্ষণ সেকশনে এত দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেছে যে পুরো শহরটা একটা মানচিত্রের মত তাঁর মনের ভিতরে অধিশায়িত ছিলো। শহরের প্রতিটা জায়গা, আনাচ-কানাচ, রাস্তাঘাট, কানা গলি আর চিপা গলি সবই ছিলো তাঁর মুখস্থ। পুরো মন্ট্রিয়ালে শহর সম্পর্কিত এত জ্ঞান তাঁর মত আর কেউ রাখতো না। ডজন খানেক পুলিশ আর […]
দশ রুপি
দূরে গলিটার শেষ মাথায় বাচ্চা মেয়েগুলোর সাথে সে খেলছিলো। চালির ভিতরে আনাচে-কানাচে তাঁর মা তাঁকে পাগলের মতো করে খুঁজলো। কিশোরী তাঁদের ঘরে বসে অপেক্ষা করছিলো, কেউ একজন তাঁর জন্যে চা আনতে গেছে। সারিতার মা এখন চালির পুরো তিনটা তলাতেই সারিতাকে খোঁজা শুরু করে দিলো। কে জানে, সারিতা কোন খুপরিতে গিয়ে মরে পড়ে আছে? সে এমনকি […]
গন্ধ
সেদিনও বৃষ্টি হচ্ছিলো—আজকের মতই। জানালার বাইরে, একইভাবে অশ্বথ গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে সিক্ত হয়ে চিকচিক করছিলো—যেমনটা করছে আজকেও। সেগুন কাঠের সেই খাটটায়, যেটাকে এখন জানালা থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে আনা হয়েছে, সেখানে রান্ধিরের গায়ে নাক চাপা দিয়ে শুয়ে ছিলো একটা মারাঠি মেয়ে। জানালার বাইরে, অশ্বথ গাছের পাতাগুলো লম্বা কানের দুলের মত ধিকিধিকি কাঁপছিলো রাতের ধূসর […]
ব্লাউজ
মমিন গত কয়েকদিন যাবত এক ধরণের অস্থিরতায় ভুগছে। তাঁর পুরো শরীরটা যেন একটা দগদগে বিষফোঁড়া। সর্বদা সে একটা রহস্যজনক ব্যথা অনুভব করে —কাজ করতে গেলে, হাঁটতে গেলে, এমনকি চিন্তা করতে গেলেও ব্যথাটা তাঁর অনুভূত হয়। যতবারই সে এই অনুভূতিটাকে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছে, ততবারই ব্যর্থ হয়েছে। বসে থাকা অবস্থায় মাঝে মাঝে সে ব্যথাটার একটা ব্যাখ্যা দাঁড় […]
অনুবাদ গল্পঃ ডিম
যখন মারা গেলেন, তখন আপনে বাসায় ফিরতেছিলেন। সড়ক দুর্ঘটনা ছিলো। উল্লেখযোগ্য কিছুই না, তারপরেও ব্যপারটা সাংঘাতিক। আপনে বউ আর দুইটা বাচ্চা ফালাইয়া মইরা গেছেন। মৃত্যুটা ছিলো যন্ত্রনাহীন। ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করছে আপনারে বাঁচানোর, কিন্তু তাঁদের চেষ্টায় কাজ হইলো না। আপনার পুরা শরীরের সব হাড়গোড় চুরমার হইয়া গেছিলো, মইরা গেছেন এইটাই ভালো হইছে, বিশ্বাস করেন। এরপরই […]