সবার সাথে একা

মাংস পিণ্ডটা আচ্ছাদিত করে কঙ্কালটাকে আর তাঁরা সেখানে জুরে দেয় একটা মন কখনও কখনও একটা আত্মা, মহিলাটা ফুলদানিগুলো ছুড়ে মারে দেয়ালে, ভেঙ্গে চুরমার লোকটা মদ গেলে খুব এবং কেউই খুঁজে পায় না একজনকে কিন্তু খুঁজতে থাকে সবাই হামাগুড়ি দিয়ে উঠে, নেমে বিছানা থেকে। মাংস আচ্ছাদিত করে কঙ্কালটাকে, আর মাংস খুঁজে বেড়ায় মাংসের চাইতেও বেশী কিছু। […]

আমার পেছনে ডুব দেয় অনন্তকাল

আমার পেছনে — ডুব দেয় অনন্তকাল— আমার সম্মুখে — অমরত্ব— আর আমি — এ দুয়ের মধ্যিখানে— মৃত্যু হল পুবাকাশের ধূসর প্রবাহমান বাতাস, মিশে যায় ভোরের নরম আলোয়, পশ্চিমে দিন শুরুর আগেই— এটা রাজত্ব — অতঃপর — তাঁরা বলে— নিখুঁত — বিরতিহীন রাজতন্ত্র— যার রাজপুত্র — অমানবের ছেলে— সে— তাঁর অন্তহীন বংশ পরম্পরা— সে — বৈচিত্রপূর্ণ […]

দূরে যাইও না

দূরে যাইও না, একদিনের জন্যেও না, কারণ— কারণ — ক্যামনে বলিঃ একটা দিন যে অনেক লম্বা আমি অপেক্ষা করতে থাকব তোমার জন্যে, যেন একটা শূন্য ষ্টেশনে যখন ট্রেনগুলা এক কোনায় পইড়া থাকে, ঘুমে বিভোর। আমারে ছাইড়ো না, এক ঘণ্টার জন্যেও না, কারণ তখন যন্ত্রণার ছোট ছোট ফোঁটাগুলা এক হইয়া দৌড়াবে, ঘরের খোঁজে কাতর এদিক-ওদিক ঘুইরা […]

আমি কেহ নই! তুমি কে?

আমি কেহ নই! তুমি কে? তুমিও কি আমার মতই কেহ নও? তাহলে তো আমরা এখন দু’জন — কাউকে বলো না কিন্তু! শুনতে পেলে তাঁরা ডাক ঢোল পেটাবে — জানো তো! আহ! কি ক্লান্তিকর কেহ হওয়াটা! কতটা লৌকিক! একটা ব্যাঙের মত সারাটা দিন প্রশংসায় পঞ্চমুখ সোঁদা মাটির দিকে তাকিয়ে নির্লজ্জের মত নিজের নাম আওড়ানো ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, […]

আমি হইতে চাই বিষণ্ণ

আমি চাই, আমি চাই, আমি চাই, বিষণ্ণ হইতে। পাহাড়ের পেছনে পিছলাইয়া নাইমা পড়ে সূর্যটা আমি চাই ফাঁকা হইতে, ভিতরে। সবাই যে ভালোবাসা নিয়া প্রতিজ্ঞা করে, কোথায়, খুঁইজা পাব আমার দোরগোড়ায়? মনে হয় আমি সরাইয়া দিছি ভালোবাসা ঝাড়ু দিয়া, দিনের পর দিন। আমি চাই, আমি চাই, আমি চাই, শূন্য হইতে। ব্যথা নয়, অনুশোচনা নয়, আনন্দও নয় […]

যদি আমি মইরা যাই, আর না মরো তুমি —

যদি তুমি মইরা যাও, আর না মরি আমি— চলো শোকরে আর দীর্ঘ হইতে না দেই, না দেই বড় হইতে যেইখানে দুইজনের বাস, তাঁর চাইতে বিস্তীর্ণ আর কি হইতে পারে! ফসলের গায়ে লাইগা থাকা ধূলি, মরুভূমির বালি, সময়, এলোমেলো জল, আবছা হাওয়া ঝাইড়া নিয়া গেছে আমাদেরকে, শস্যকণার মতই। হয়তো মহাকালের বুকে আমরা খুঁইজাই পাইতাম না দুইজনরে। […]

অনুপস্থিতি

আমি ছাইড়া যাই নাই তোমারে, খুব একটা, যখন তুমি ঢুইকা পড় আমার ভেতর, স্বচ্ছ, অথবা কম্পমান, অথবা অপ্রস্তুত, আহত হইয়া আমার দ্বারা অথবা উদ্বেলিত, ভালোবাসায়, তোমার চক্ষু বুইঝা আসে উপহার পাইয়া, জীবনের অন্তহীন উপহার, আমি দেই তোমারে।   প্রিয়তমা, আমরা দুইজন দুইজনরে খুঁইজা পাইলাম তৃষ্ণার্ত, পান করলাম সবটুকু পানি, আর সবটুকু রক্ত, আমরা পাইলাম দুইজনরে […]

শবাধারের গান

তুমি এখনো নিস্তব্ধতার সেই অক্ষত নববধূ, তুমি মৌনতা আর ধীর সময়ের পালক সন্তান। তুমি ইতিহাসবেত্তা, তোমার গায়ে অরন্যের ইতিহাসের নিখুদ খোঁদাই। তুমি সেই ইতিহাসবিদ, যে পুস্পময় ভ্রমণের কথা আমার মিত্রাক্ষর কবিতার চেয়ে মিষ্টি করে প্রকাশ করতে পারে না। তবু তোমার গায়েই আমি হাজার বছরের ইতিহাস পড়ি। কত গল্পে ভঁরা চিত্রকল্পে খচিত তোমার ঐ শরীর! কে […]

প্রদীপটা যখন চূর্ণবিচূর্ণ

প্রদীপটা যখন চূর্ণ-বিচূর্ণ, ধুলোয় পতিত আলোটা তখন শুয়ে থাকে মৃতের মত; মেঘগুলো যখন বিক্ষিপ্ত, রংধনুর উজ্জ্বল রঙ্গই তখন শেষ আশ্রয়; বাঁশিটা যখন ভাঙ্গা, তখন কেউ মনে রাখে না তার মধুর সুর; অধরে যখন কথা ফোটে, তখন মনে থাকে না কোনো প্রেমালাপ। বাঁশি নয়, বাতি নয়, টিকে থাকে সুর, বেঁচে থাকে সৌন্দর্য; আত্মাটা যখন বোবা হয়ে […]

উত্তরাধিকার

শেষবার যখন মরেছিলাম, প্রিয়তমা, আমি মরি ততবার, যতবার ছেড়ে আসি তোমাকে, যদিও মাত্র ঘণ্টা খানেক হলো আমি তুমিহীন, —কিন্তু প্রেমিকের প্রতিটা ঘণ্টা যেন অনন্তকাল— আমার এখনো মনে পড়ছে, আমি কিছু একটা বলেছিলাম, দিয়েছিলাম কিছু একটা; যদিও আমি মরে যাব, হয়তো আমিই হব আমার মৃত্যুদণ্ড নির্বাহক, আমিই হব আমার উত্তরাধিকার। আমি নিজেকে বলতে শুনেছি, “ তাঁকে […]