আমি তোমার পাশাপাশি শুয়ে ঘুমুতে চাই, গিঁট লেগে থাকবে তোমার-আমার চুলে। একীভূত আমাদের অঙ্গ দুটো, বালিশে রূপ নেবে তোমার মাথা। আমি তোমার পিঠাপিঠি হয়ে ঘুমুতে চাই, নিঃশ্বাসহীন একত্বতা। কোন শব্দ নেই আমাদের অন্যমনস্ক করার, কোন চক্ষু নেই মিথ্যা বলার, কোন বস্ত্র নেই কৃত্রিমতার। আমি তোমার বুকে বুক মিশিয়ে ঘুমুতে চাই, চাপা উত্তেজনায় ঘর্মাক্ত, হাজারো কাঁপুনির […]
Author: শরিফুল ইসলাম
মুখ
তোমার কারণে আমি হয়েছি এক উল্কাপিণ্ড, আমি ধেয়ে যাই আকাশপানে, যেথায় তোমার বাস, এখন তুমি চাইলে অবজ্ঞায় ফিরিয়ে দিতে পারো আমায় অথবা দেখেও করতে পারো না দেখার ভান। কিন্তু আমার স্ফুলিঙ্গ – প্রজ্বলিত হবেই তোমার মুখ, তুমি চাইলেও লুকোতে পারবে না, পারবে না ঢেকে রাখতে তোমার গাঢ় নীলে পুঞ্জিভূত সৌন্দর্য। শরিফুল ইসলাম মে ০৭, ২০১৮
আয়না চোর
তোমার একটা আয়না আমি চুরি করেছি – তুমি বলতে পারো, ‘চাইলেই পারতে, আমি দিয়ে দিতাম।’ কিন্তু না – এই আয়নার সৃষ্টি হয়েছে শুধু চুরি হওয়ার জন্য। আমি বুঝে গেছি কালান্তরে আমিই এটাকে চুরি করব বারবার। আমি আয়না দেখি। সকাল, বিকাল, রাতে। আমার সবক’টা যুক্তির ঘর ভেঙ্গে চুরমার হয়। আমি দেখি – একটা পরাবাস্তব সীমাহীন ছোট্ট […]
লাভিং ভিনসেন্ট (২০১৭)
আমার জন্মেরও একশো বছর আগে পৃথিবীর অন্য প্রান্তে একজন লোক আপন মনে ছবি আঁকাবুকি করত। দুনিয়ার অন্য কিছুর দিকে তাঁর তেমন কোন আগ্রহ ছিল না। শুধু চক্ষু মেলিয়া সাধারণ চোখ যে সৌন্দর্য দেখতে পায় না, সেই সৌন্দর্যকে তুলি দিয়ে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলার উপর তাঁর ব্যাপক আগ্রহ ছিল। তাঁর জন্ম হয়েছিল উচ্চ মধ্যভিত্ত পরিবারে। কিন্তু বয়সকালে […]
এমোরাল
তখন নাইট শিফটে কাজ করি। অফিস শুরু হয় রাত দশটায়, শেষ হয় সকাল সাতটায়। সারারাত লম্বা একটা ডেস্কে সারিবদ্ধ ভাবে বইসা সামনে দুইটা মনিটরের দিকে তাকাইয়া থাইকা, ডান হাত দিয়া মাউস নাড়াইয়া, দুই হাতের দশ আঙুল দিয়া কীবোর্ডে টিপাটিপি কইরা পার কইরা দিতাম রাতের পর রাত। কাজগুলা ছিল গদবাঁধা, তার মানে খুব একটা সহজ যে […]
অগ্নিচোখ
হসপিটালের লাউঞ্জে বইসা আছি। ডাক্তার আসবে। কম্পাউণ্ডাররে জিজ্ঞেস করলেই সে একঘেয়ে ভাবে বইলা যাইতেছে ‘স্যার আসতেছে, পথে’। কিন্তু অনন্তকাল পার হইয়া যায়, তাঁর স্যার আর আসে না। এইটা ডাক্তারদের স্বভাব। কনসাল্টিং আউয়ারে আইসা এরা প্রায় কখনই পৌছায় না। তবে অনন্তকাল পার হইয়া গেলেও এইটা নিশ্চিত যে ডাক্তার আসবে। দেরি করলেও এরা আসে। এই ব্যপারটারে মন্দের […]
অ-ঈশ্বর
একশো সতেরটা জনম পার করার পর আমি আটকা পড়েছি আঠারোতে, সেও অর্ধ শতাব্দী আগের কথা। পুনর্জন্মের তৃষ্ণায় আমার আত্মা ফেটে এখন চৌচির। থমকে গেছে জন্মান্তরের উড়ন্ত পাল। নিস্তব্দ। সময়ের জরায়ুতে এখন আর উর্বরতা নেই। সূর্যটাও স্থির। চারিদিকে বিস্তীর্ণ আলোর জাল। আছে আত্মা জ্বালা করা তাপ। তবে আলোর ফোটনগুলো সব আমার মতই তৃষ্ণার্ত। ঢেউ নেই, ঢেউ […]
অর্ধেক জীবন
জীবনের পথে আমি হেঁটে বেড়িয়েছি অর্ধেক, অর্ধেক পিয়েছি জল। এ যেন জ্বরের ঘোরে দেখা স্বপ্নের মধ্যে হাঁটাহাঁটি, সহস্র মাইল হেঁটেও পা ছুঁতে পারে না মাটি। অর্ধেক খোলা চোখ অর্ধেক রুদ্ধ হৃদয় নিজেকে নিয়ে অর্ধেক জানাজানি অর্ধেক বলা কথা নিজেকে অর্ধেক দেখি ভূত দেখার মত অর্ধেক দেখি তোমাকে, অর্ধেক মানুষ হয়ে ঘুরে বেড়াই […]
কালচার
একটা কালচারে বরাবরই খারাপ কিছু ঘটতে থাকে। খারাপ কি? খারাপ হইলো একটা কন্ডিশনাল অবস্থান, যা ঐ পার্টিকুলার কালচাররে কালেকটিভলি অসুখী কইরা তোলে। কালচারের এই খারাপরে কখনই এভারেজ পিপলরা দেখতে পায় না। কারণ সে এভারেজ। দেখতে না পাইলেও সে অসুখে ভোগে। এভারেজ কারা? যারা দেখতে পায় না তারাই। ‘এভারেজ’ শব্দটা তাঁদেরকে চিহ্নিত করার একটা আপাত বিশেষণ। […]
উপড়ে ফেল আমার দুটি চোখ
উপড়ে ফেল আমার দুটি চোখ, আমি তোমাকেই দেখব, সিলগালা করে দাও আমার দুই কান, আমি তোমাকেই শুনব। এবং পা ছাড়াই তোমার কাছে ছুটে যাব আমি, মুখ ছাড়াই আমি জপতে থাকব তোমার নাম। ভেঙ্গে চুরমার করো আমার বাহুদ্বয়, তোমাকে ধরে রাখব, হৃদপিণ্ডই হয়ে উঠবে আমার হাত। হৃদপিণ্ডকে থামিয়ে দাও, ধুক ধুক ধ্বনি শুরু হয়ে যাবে আমার […]