মানুষ প্রতিনিয়ত রিয়্যালিটির র্যানডমনেসের ভয়ংকর ঝুঁকিতে বেঁচে থাকে। নেতিবাচক ঘটনার ঝুঁকি। দৈনন্দিন চয়েস আর সিদ্ধান্তে মানুষ নিজের অজান্তেই জুয়াড়ির ভূমিকা পালন করে। দৃশ্যমান বড় আকারের একটা ঘটনাকে টানলে, যেমন, প্রতিদিন র্যানডমলি সড়ক দুর্ঘটনায় বিভিন্ন সংখ্যায় মানুষ মারা যায়। এই তথ্য জেনেও কেউ কোনদিন গাড়ি চড়া বন্ধ করে না। কারণ, সবাই মনে মনে ধরে নেয় যে, প্রতিদিন কেউ না কেউ মারা গেলেও সে মারা যাবে না। সকল মানুষই র্যানডমনেসের প্রোবাবিলিটি-তে নিজেকে বসিয়ে রেখে কাজকর্ম করে।
অ্যামেরিকান রিস্ক এনালিস্ট নাসিম তালিব বলেন, রিয়্যালিটি রাশিয়ান রুলেটের চেয়েও ভয়ংকর। রাশিয়ান রুলেট খেলায় একটা রিভলবারের ছয়টা চেম্বারের পাঁচটাই ফাঁকা থাকে। বুলেট থাকে একটাতে। পাঁচের বিপরীতে এক বুলেটের লেগে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক। তাই কেউ মারাত্মক লেভেলের আত্মঘাতী না হলে এমন খেলা খেলে না। কিন্তু ছয় চেম্বারের বদলে এক হাজার চেম্বারের একটা রিভলবারে যদি একটা বুলেট ভরে খেলা হয়, সেক্ষেত্রে বুলেট লাগার ঝুঁকি অনেক কমে আসে। এক্ষেত্রে এমনও হতে পারে যে, ডজনখানেকবার ট্রিগার টানার পর ব্যক্তি ভুলেই যাবে যে এটার ভেতরে কোন বুলেট আছে। বারবার বুলেট মিস হতে হতে একসময় একটা ভোঁতা নিরাপত্তার অনুভূতি এসে চাপবে তার মনে। অথচ যে-কোন সময় ওই এক বুলেট আঘাত হানতে পারে তার মাথায়। তালিব বলেন, রাশিয়ান রুলেটের ঝুঁকিটা তাও দৃশ্যমান। কিন্তু রিয়্যালিটির ঝুঁকি অদৃশ্য। সেটা আরও ভয়ংকর।
র্যানডমনেসের ভয়াবহতায় মানুষ খুব একটা আতঙ্কিত না হওয়ার কারণ হল, তার সময়ের সেন্স পারসেপশন। এমনিতে রিয়্যালিটিতে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। কিন্তু সংবেদনশীল প্রাণী হিসেবে মানুষ সময়কে যেভাবে অনুভব করে, সেখানে একটা ঝুঁকিপূর্ণ কাজকে সে রিপিট করার সুযোগ পায় অনেকবার। সেটা থেকে তার নিরাপত্তার ভোঁতা অনুভূতিটা আসে। কিন্তু আবার রিয়্যালিটির বুলেটের আঘাতও সে খায় অনেকবার। যদি সেই আঘাতে সে পুরোপুরি না মরে, তখনও সে প্রোবাবিলিটি-তে ফোকাস করে আতঙ্ক ভুলে যায়। এটা ছাড়াও মানুষের আতঙ্ক ভুলে থাকার দ্বিতীয় আরেকটা বড় কারণ হল, সকল ঘটনা-দুর্ঘটনাকে একটা পরিকল্পনাকারী ঐশ্বরিক সত্তার উপরে ছেড়ে দিতে পারা।