এভ্রিথিং এভ্রিহয়ার অল এট ওয়ান্স

ইংরেজি “নাথিং ম্যাটার্‌স” কথাটার দুই ধরণের অর্থ দাঁড় করানো যায়। ‘নাথিং’ শব্দের অর্থ যদি হয় ‘কিছুই না’, তখন যে নিহিলিস্টিক অর্থটা দাঁড়ায় সেটা হল, ‘কোন কিছুই ম্যাটার করে না’। অর্থাৎ সবকিছুই একটা নেতিবাচক সুরে অর্থহীন। আর ‘নাথিং’ শব্দের অর্থ যদি হয় ‘শূন্য (যা কিছুই না)’, তখন অর্থটা দাঁড়ায়, ‘শূন্য ম্যাটার করে’। এই অর্থটা ইতিবাচক। যেভাবেই দেখা হোক, এই বাক্যটাতে একটা নাই নাই ব্যাপার থেকেই যায়। কারণ শূন্য ম্যাটার করলেও শূন্যকে তো আর ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। কিছুই যদি ম্যাটার না করে তাহলে জগতের এত আয়োজন, আমাদের অনুভূত সুখ, দুঃখ, যন্ত্রণা এসবের কোনকিছুরই কি কোন অর্থ থাকে? না, থাকে না। না থাকলে সেটা আমাদের অর্থলোভী মনের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। আবার সেটা স্বস্তিদায়কও হতে পারে কারও কারও মনে।


যদি এমন হয়, আপনি জানতে পারলেন যে মাল্টিভার্সের সত্যিই অস্তিত্ব আছে, যেখানে আপনি একই ব্যক্তি অসংখ্য মহাবিশ্বে, অসংখ্য জীবন সমান্তরালভাবে একই সময়ে যাপন করে যাচ্ছেন। হাইপোথেটিক্যালি, তখন আপনার কাছে কোন কিছুই ম্যাটার করবে না। কারণ আপনি এই জগতে, এই জীবনে যে ভুলই করেন না কেন অথবা যত চমকপ্রদ কিছুই করেন না কেন, অন্য কোন জগতে, অন্য কোন জীবনে আপনি ভিন্ন কিছু করেই যাচ্ছেন এবং এমন কিছু নাই যা আপনি আপনার মাল্টিভার্সে মিস করে যাচ্ছেন। এই জীবনে কিছু না হলে, সেটা অন্য কোন জীবনে হবে। সুতরাং কোন কিছু এখানে ম্যাটার করার কথাই না। কিন্তু প্র্যাক্টিক্যালি, আমরা মাল্টিভার্সের অস্তিত্ব টের পাই না। সুখ, দুঃখ, আর যন্ত্রণায় ভরা আমাদের এই ক্ষুদ্র জীবন ছাড়া আমরা অন্য কোন জীবনের কথা জানি না। আমাদের এইটুকু জীবনে আমরা যা করি আর যা না করি, যা পাই আর যা না পাই, সবকিছুই আমাদের কাছে ম্যাটার করে। অর্থাৎ প্রতিটা ক্ষুদ্র ব্যাপারও আমাদের কাছে বড় আকারে আবির্ভূত হয়। যখন যন্ত্রণায় পতিত হই, তখন মনে হয় এর বুঝি আর শেষ নাই। যখন চিত্ত আনন্দে মত্ত হয়, তখন আবার ভুলে যাই যন্ত্রণার কথা। একটা গভীর অর্থ জুরে দেই আমাদের প্রতিটা কর্মকাণ্ডের সাথে।


বৈজ্ঞানিক মাল্টিভার্সের অস্তিত্ব আমরা টের না পেলেও, আমাদের ক্ষুদ্র জীবনেও আছে অসংখ্য অধ্যায়, ঘটনা, আর মুহূর্ত। আমাদের প্রতিটা সুখ, প্রতিটা দুঃখ, প্রতিটা ব্যথা আমাদের সাবজেক্টিভ অনুভূতিতে একেকটা আলাদা আলাদা মহাবিশ্বের ভার বহন করে। এবং এর কোনটাই কখনও চিরস্থায়ী হয় না। কোন দুঃখই থাকে না চিরকাল, না কোন আনন্দানুভূতি। চিরদিন থাকে না কোন প্রাণ কিংবা বস্তুও। একটা রহস্যজনক এনট্রপির খেলা চলছে আমাদের জীবনে, মরণে, মননে, সুখে, দুঃখে, আর রিয়্যালিটিতে। আমাদের অনুভূতি কিংবা বিশ্বাস, আমাদের জীবন কিংবা রিয়্যালিটি সবকিছুই যেহেতু চিরপরিবর্তনশীল, তাহলে কি আসলেই কিছু ম্যাটার করে? আমরা তা সঠিক জানি না। আমরা জানি না আসলে কী চলছে আমাদের চারপাশে, কী চলছে জীবনে, কী চলছে এই মহাবিশ্বে। তাই মি. ওয়েমণ্ড বলেন, “দ্যা অনলি থিং আই নো ইজ দ্যাট উই হ্যাভ টু বি কাইন্ড। প্লিজ, বি কাইন্ড। এসপেশিয়ালি হোয়েন উই ডু নট নো হোয়াট ইজ গোয়িং অন।”

শরিফুল ইসলাম
[এভ্রিথিং এভ্রিহয়ার অল এট ওয়ান্স]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *