সিনেমা পরিচালক কাজী হায়াৎ একবার এক রেডিও ইন্টার্ভিউতে বলেছিলেন, সিনেমা অনেক শক্তিশালী। এটা মানুষকে একটা কমন মরাল গ্রাউন্ডে দাঁড় করানোর অন্যতম মাধ্যম। একটা উদাহরণ দিয়ে উনি বলেছিলেন, যদি একজন ছিনতাইকারী সিনেমা দেখতে হলে যায় (শুধু সিনেমা দেখার জন্য), আর সেই সিনেমায় যদি কোন ছিনতাইয়ের দৃশ্য থাকে যেখানে নায়িকার হাতের ব্যাগ ছিনতাই হওয়ার পর নায়ক দৌড়ে ছিনতাইকারীকে ধরে পেটাচ্ছে, সেই দৃশ্যে অন্যান্য দর্শকের মত ছিনতাইকারী দর্শকও হাততালি দিয়ে উঠবে। সে ভুলে যাবে যে সে নিজেও একজন ছিনতাইকারী।
আসলেই কি এটা ঘটবে?
সম্ভাবনা আছে। কারণ, মানুষ মরাল এনিম্যাল। শুধু এনিম্যাল হলে ব্যাপারটা হয়তো অন্যরকম হত। যেহেতু মানুষের একটা মাঙ্কি মাইন্ড আছে, তাঁকে একটা মরাল গ্রাউন্ডে দাঁড়িয়েই সবকিছু করতে হয়। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল, যেসব মরালীটির উপর ভিত্তি করে মানুষের বিশ্বাসগুলো গড়ে উঠে এর খুব অল্পই সে নিজে মেনে চলে। নিজে মানুক আর না মানুক বিশ্বাসের জায়গায় সে এগুলো যত্ন করে গুছিয়ে রাখে। কেউ সেখানে হাত দিলেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে। এটা কেন হয়?
মানুষ তাঁর প্রবৃত্তির দাস (বেশীরভাগ সময়ই)। সে চাইলেও এই দাসত্ব থেকে মুক্ত হতে পারে না। তবে একটু-আধটু পারে বলে তাঁর মনে হয়। এবং এই না পারার বিষয়টা সে গ্রান্টেড ধরে নেয়। এই ধরে নেয়ার পর নিজের অসহায়ত্বকে সে মরালীটির বিশ্বাস দিয়ে ঠেস দেয়। এই ঠেস দায়িত্ববোধ কমায়, নিজেকে হালকা করতে সাহায্য করে। তখন নিজে চোর হয়েও অন্যের চুরিকে মরালীটির আয়না দিয়ে ঘৃণার চোখে দেখার মাঝে একটা শান্তি কাজ করে।
সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯