প্লবতা

প্রেম এসে নিয়ে গেছে আমার সকল কর্ম, সকল বাস্তবতা,
বিনিময়ে আমাকে ভরিয়ে দিয়ে গেছে কাব্যকলায়।
আমি বারবার চেষ্টা করেছি চুপ থাকার
অন্য কারো জোরে নয়, শুধু তোমার জোরে, কিন্তু পারিনি।

আমি বাধ্য হয়েছি হাততালি দিতে, গেয়ে উঠতে।
আমি ছিলাম শ্রদ্ধাভাজন, সৎ এবং স্থির,
কিন্তু এমন জোরালো বাতাসের মুখে দাঁড়িয়ে
কে মনে রাখতে পারে এইসব কথা?

একটা পর্বত নিজের গভীরে ধরে রাখে একটা প্রতিধ্বনি।
ঠিক এভাবে আমিও ধারণ করি তোমার কণ্ঠ।

আমি তো তোমার আগুনে ছুড়ে ফেলা এক টুকরো কাঠ,
দ্রুত মিশে যাই ধোঁয়ায় আর ছাইয়ে।

আমি তোমাকে দেখেছি এবং হয়েছি তোমার মত শূন্য।
এই যে শূন্যতা, অস্তিত্বের চেয়েও সুন্দর!
এই শূন্যতা ধ্বংস করে দেয় অস্তিত্বকে, তবুও যখন শূন্যতা আসে
অস্তিত্ব জেগে উঠে, সৃষ্টি করে নতুন অস্তিত্ব।

আকাশটা নীল।
এই দুনিয়াটা হল রাস্তার পাশে বসে থাকা এক অন্ধ লোক।

কিন্তু যে তোমার শূন্যতাকে দেখেছে
তাঁর দৃষ্টি ভেদ করে গেছে আকাশের নীল আর সেই অন্ধকে।

একটা মহৎ আত্মা মোহাম্মদ কিংবা যিশুর মতই লুকিয়ে থাকে,
হেঁটে বেড়ায় একটা শহরে মানুষের ভিড়ে যেখানে তাঁকে কেউ চিনে না।

তাঁকেই বন্দনা করা যায়
যে নিজেকে সমর্পণ করেছে শূন্যতার কাছে।

সূর্যের বন্দনা করা তো তোমার নিজের চোখেরই বন্দনা করা!
বন্দনা কর ঐ সমুদ্রের। আমরা যা বলি তা তো একটা ছোট্ট নৌকা মাত্র!

সুতরাং এই যাত্রা চলতেই থাকে
কেউ জানে না তাঁর গন্তব্য।

সমুদ্রের বুকে জায়গা পাওয়াই
আমাদের সবথেকে বড় পাওয়া।
এটাই হল পূর্ণ জাগরণ!

এতদিন আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম তা নিয়ে কেন দুঃখ করব?
আমরা কত সময় ধরে অজ্ঞান ছিলাম সেটা বড় কথা নয়।

আমরা মাতাল, কিন্তু অপরাধবোধে ভুগো না।
অনুভব করো তোমার চারপাশের আবেগটাকে,
প্লবতাকে।

তর্জমা
২০/০৩/২০১৬
মূলঃ বুয়ান্সি — রুমি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *