মিনি রিভিওঃ ডগটুথ (২০০৯)

মুভির নাম ডগটুথ অর্থাৎ কুত্তার দাঁত। মুভির নামটা যেমন অদ্ভুত, মুভিটাও তেমন অদ্ভুত। মুভির নাম কুত্তার দাঁত কেন হইল সেটা ভাববার বিষয়। মুভিতে একবার একটা কুত্তা দেখাইলেও মুল কাহিনীর সাথে সত্যিকারের কুত্তার দাঁতের কোন সম্পর্ক নাই। তবে “কুত্তার দাঁত” নামটা কাহিনীর উপর ভিত্তি কইরা একটা অর্থ বহন করে। অর্থটা মুভি দেইখা বুইঝা লওয়ার ভার আপনাদের উপর বর্তাইল। মুভিতে দেখানো হইছে পাহাড় ঘেরা আইসোলেটেড একটা গোছানো বাড়িতে দুই প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে এক ভদ্রলোক বাস করে। অদ্ভুত ব্যাপার হইল বাড়ির কর্তা তার তিন ছেলে মেয়েকে জন্ম থাইকাই বাড়ির বেড়ার বাইরে যাইতে দেয় নাই। এমনকি বউরেও না, তবে সেটা কবে থাইকা ঠিক ক্লিয়ার না। শুধু কর্তাই গাড়ি নিয়ে বাড়ির বাইরে যাইতে পারে। ফলে ছেলেমেয়ে গুলা নির্দিষ্ট শেখানো কিছু শব্দমালা আর জিনিস পত্রের নাম ছাড়া আর কিছুই জানে না বা দেখেও নাই। বাড়ির বাইরে বলতে গেলে শুধু আকাশ আর মাঝে মাঝে আকাশ দিয়া একটা বিমান উইড়া যাইতে দেখে। তবে বিমানটারে ওরা ঠিক বিমান মনে করে না, কিন্তু কি মনে করে সেইটাও ক্লিয়ার না। হয়তো পাখি জাতীয় কিছু একটা। কর্তা বাহির থেকে যেসব পণ্য কিনা আনে সেগুলার গায়ের লেবেল বাড়িতে ঢুকার আগেই তুইলা ফালায়। যাতে কোন রকমেই ছেলে মেয়েরা বাইরের জগতের আইডিয়া না পায়। এইরকম আরও অনেক উদ্ভট ঘটনা নিয়া পুরা মুভি।

মুভিটা সম্পূর্ণ আনকনভেনসনাল। ভিন্ন ধাঁচের। কাহিনী অরিজিনাল। দেখার সময় আপাতদৃষ্টিতে পয়েনটলেস মনে হইলেও, আসলে গভীর। সিনেমাটোগ্রাফি ইউনিক। কাহিনীতে স্যাটায়ার করা হইছে মধ্যবিত্ত মেকানিক মিজারেবল জীবনকে। মুভিতে বাড়িটির দৃশ্যমান বেড়া সিম্বলাইজ করে আমাদের জীবনে সমাজের দিয়া দেওয়া অদৃশ্য বেড়াকে। যারা মাসালা টাইপ মুভি দেখে অভ্যস্ত তারা এই মুভি দেখতে না বসাই উত্তম। কারন অনেকেই মুভির স্যাটায়ারটা না ধরতে পাইরা আইএমডিবিতে পরিচালকের/মুভির গোষ্ঠী উদ্ধার কইরা ফালাইছে। তবে যারা অদ্ভুত, ব্যাতিক্রম ও অরিজিনাল কাহিনী দেখতে ভালোবাসেন, চিন্তার খোরাক চান। তাদের জন্য এই মুভি সুখাদ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *