গ্রামে ‘রেডি খেলা’ নামক এক ধরণের খেলা ছিল। মাটিতে অনেকগুলা দাগ কাইটা কোটা আকারে একটা ‘রেডি ঘর’ বানাইতে হইত। খেলার নিয়ম হইল, নিজ নিজ কোটায় দাঁড়াইয়া থাইকা, দাগ পার না হইয়া প্রতিপক্ষকে হাত দিয়া ছোঁয়া লাগতো। এতে কইরা একজন খেলোয়াড় নিজের কোটায় দাঁড়াইয়া শরীরটাকে যতটা সম্ভব বেন্ড কইরা, আরও অনেক রকম কসরত কইরা আরেকজনরে ছোঁয়ার চেষ্টা করতো। কিন্তু শরীরের কোন না কোন অংশ দাগের ভিতরে রাখতেই হইত। দাগের বাইরে পুরা শরীর চইলা গেলেই শেষ। এই খেলাটা এখন আর গ্রামে নাই, কিন্তু শহরে আছে। শহরে যারা আইডিওলোজিস্ট তথা আদর্শবাদী, তাঁদের মধ্যে যারা একটু মডারেট অর্থাৎ আদর্শও মানে আবার এর বাইরে নিজের বুদ্ধিমত্তাও খাটায়, তাঁরা এই খেলাটা খেলে। তাঁরা তাঁদের আদর্শের দাগের ভিতরে থাইকা অন্যরে ছোঁয়ার চেষ্টা করে। আপ্রাণ চেষ্টা করে। কিন্তু খুব খেয়াল কইরা, দাগ যেন ক্রস না হয়! তখন উনাদের বিভিন্ন মানসিক কসরতের উপর নির্ভর করতে হয়। এবং তাঁরা সেইটা প্রতিনিয়ত কইরা যায়। একজন গোঁড়া আদর্শবাদীর ক্ষেত্রে অন্য আদর্শের কাউরে ছুইলেই তাঁর জাত চইলা যায়। আর একজন মডারেটের ক্ষেত্রে তাঁর দাগ পার হইলেই জাত চইলা যায়। এরা সবাইরে ভালবাসতে চায়, কিন্তু দাগের কারণে বুক খুইলা সেইটা করতে পারে না।— ‘জাত গেলো জাত গেলো বলে একি আজব কারখানা।’
জুলাই ১১, ২০১৬।