প্রায় সব লেভেলের মানুষই নিজেরে যুক্তিবাদী মনে করে। কারণ নিজের যুক্তির সাথে সাংঘর্ষিক কোন কিছুরেই মানুষ বিশ্বাস করতে চায় না। নিজের বিশ্বাসটা ভিত্তিহীন হইলেও সে এইটারে তাঁর যুক্তির সাথে গোঁজামিল দিয়া একটা ভিত্তি তৈরি কইরা নেয়। আবার সব লেভেলের মানুষই বিশ্বাসী। সবাই কিছু না কিছু বিশ্বাস করে। এমনকি সন্দেহবাদী আর অবিশ্বাসীরাও। কারণ একজন অবিশ্বাসী বিশ্বাস করে যে সে বিশ্বাস করে না। তাঁর বিশ্বাসই তাঁর অবিশ্বাসরে ভেলিডেট করে। সুতরাং বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী আর যদু-মধু-কদু সবাই তাঁর নিজস্ব জ্ঞান অর্জন করে একটা মজার এলগরিদমের মাধ্যমে। এখানে তাঁরা নিজের পছন্দমত জিনিসপত্র খোঁজে এবং সেইখান থেকে জ্ঞান আহরণ করে। নিজের গণ্ডির বাহিরে এরা কখনই যায় না। এরকম এলগরিদমের মাধ্যমেই ইন্টারনেটে ফেসবুক, ইউটিউব চলে। যেমন ইউটিউবে আপনে একটা ভিডিও সার্চ দিলে স্ক্রিনের ডান পাশে রিলেটেড ভিডিওর সাজেশন আসবে, আনরিলেটেড কোন কিছু আসবে না, আসলেও সেইটা আপনের প্রিভিয়াস সার্চের উপর নির্ভর করে আসবে। আপনের জানতে চাওয়ার উপর নির্ভর করবে আপনে কতটুকু জানবেন অথবা কি জানবেন। এরকম কইরা প্রতিটা মানুষ মহাবিশ্বের শেয়ারড অবজেক্টিভ রিয়েলিটির ভিতরে নিজ নিজ সাবজেকটিভ রিয়েলিটির একটা বাবল (Bubble) তৈরি কইরা নেয়। এবং সারাজীবন এই বাবলের ভিতরে বইসা থাইকা, হাইসা, কাইন্দা এক সময় ভবলীলা সাঙ্গ করে, আর এই বাবলের ভিতরের রিয়েলিটিরেই সে সত্য মনে করে। তাদের মধ্যে আবার একদল চিজ আছে যারা এই বাবলের ব্যপারটা কিছুটা হইলেও বুঝতে পারে, কিন্তু তাঁরা এইটার ভিতরের রিয়েলিটিরে মডারেট কইরা ভিতরেই থাকতে চায়, বাইরে আসতে চায় না। তাদেরকে বলা যায় ‘মডারেট বাবলবাজ’। কিছু লোক শত-হাজার বছর আগে এবং কিছু লোক বর্তমানে তাদের বাবলটা ফুটা কইরা বাহির হইয়া আসলেও, বাকীরা হয়তো আগামী লক্ষ বছরেও এই বাবলটা ফুটা করতে পারবে না। কারণ তাঁরা জানবেই না যে তাঁরা বাবলের ভিতরে আছে। আফসোস!