এবং দুঃখের বিষয় হইল আপনে শত সহস্র পন্থায় জ্ঞান দিয়া, বুঝাইয়াও একজন মানুষের ভ্রম কাটাইতে পারবেন না। যদি কখনও দেখেন আপনার কথায় কারো ভ্রম কাটছে, তাহলে বুইঝা নিবেন আপনি আসলে তাঁর ভ্রম কাটান নাই, সে নিজেই তাঁর ভ্রম কাটানোর জন্যে তৈরি ছিল, আপনার কথা শুধু সেইটারে তরান্বিত করছে। ইলুশ্যন বা ভ্রমে ডুইবা থাকাটা পুরা হিউম্যন রেসের একটা বড় ধরনের নেশা। অর্থাৎ ভ্রমও একটা নেশা দ্রব্য, যতক্ষণ তাঁর নেশা না কাটবো ততক্ষণ আপনি তাঁরে যতই বোঝান সে মনে করব আপনে উল্টা পাল্টা বকতাছেন, অথবা মজা করতাছেন। কিন্তু উল্টা দিকে মজার ব্যাপার হইল, মানুষরে আপনি সহজেই ইল্যুশনের ভিতরে ঢুকাইতে পারবেন, যেইটারে আপনি মগজধোলাই বলেন আর কি। মানবজাতির এই ব্যাপারটা বড় অদ্ভুত! এবং শতকরা নব্বই ভাগের উপরে মানুষ, সারাজীবন নির্দিষ্ট কিছু ভ্রমে ডুইবা থাকে। পারসেনটিজটা এত বেশী হওয়ার কারণ হইল বেশীরভাগ মানুষই নির্দিষ্ট দুই একটা আইডিওলজির উপর ভর কইরা জীবন পার কইরা দেয়। কোন একটা আইডিওলজিরে ঠিক যেই মুহূর্তে আপনে আঁকড়াইয়া ধরেন, তখনই আপনে নিজের অজান্তেই ভ্রমে ডুব মারেন। ভ্রমে ডুইবা থাকাটা অনেক আরামের, ইন্টেলেকট খাটানো লাগে না, আইডিওলজিই সব কইরা দেয়। এবং সর্বশেষ মজার ব্যাপার হইল, এইসব ভ্রমে ডুইবা থাকা মানুষগুলার নিজ নিজ আইডিওলজি ভিন্ন হওয়ার কারণে এরা একে অন্যরে ‘ব্রেনওয়াশড’ বইলা গালি দেয়। এরা কানা, আরেকজনরেও ডাকে কানা। “এসব দেখি কানার হাটবাজার।”
জুলাই ০৩, ২০১৬।