আমি মাতাল
জন্মসুখে মাতাল, জন্মদুখেও মাতাল,
মাতাল আমি জন্মলজ্জায়,
মাতলামি আমার অস্থিমজ্জায়
মাতলামি প্রতিটা রন্ধ্রে।
আমি হেলি, দুলি, পা পিছলাই, কাদায়,
বাচ্চারা আমার পিছু নেয়, হাসে, ঢিল ছুড়ে,
আমি পিছন ফিরি, তাকাই, ঢুলুঢুলু চোখ,
বাঁকা হয় আমার ঠোঁট, তাচ্ছিল্যের হাসি
“কবে বড় হবে এরা?”
আমি অগ্নি
আগুন আমার সন্তান
আগুনই আমার প্রেয়সী,
আমি আগুন জ্বালাই, আগুনে জ্বলি,
আগুনকে খাই চুমু।
আমি মহাকাল
আমার শুরু নেই, শেষ নেই,
মাঝামাঝিও কিছু নেই।
তবুও তাঁরা আমায় কাটে, ভাঙ্গে,
ভাগ করে ঘণ্টায়, মিনিটে আর সেকেন্ডে।
দেখে আমি মুচকি হাসি।
আচ্ছা, আমার এই হাসির ব্যপ্তিকাল কত— মাস, বছর, কিংবা দিন?
নাকি অনন্তকাল?
আমি ঘুম
আমিই ঘুমের স্বপ্ন
আমি ঘুমাই, ‘সেভেন স্লিপারস’ এর পাশে,
কত সহস্র বছরের এই ঘুম?
কবে ঢুকেছিলাম সেই ঘুমের গুহায়?
হয়তো শেষের শুরুতে, অথবা শুরুর শেষটায়।
আমি রক্ত
আমিই রক্তের লাল,
আমি রক্তস্রোত
আমিই রক্তের নোনতা।
আমি ছুটে বেড়াই রক্ত শিরায়,
ঘুরেফিরি দেহের অলিতে গলিতে।
আমি হৃদপিণ্ড
হৃদপিণ্ডের ধুক ধুক ধ্বনি,
আমিই হৃদয়ের বেজে উঠা নতুন সুর।
আমি ঈশ্বরের ছায়া
উঠি, বসি, হেঁটে বেড়াই,
ঈশ্বরের তালে তালে।
মাঝে মাঝে হারাই, মিশে যাই,
মুখ লুকাই, ঈশ্বরের পদতলে
যখন সূর্যটা এসে দাঁড়ায়, ঠিক মাথার উপরে।
আমি প্রদীপ
মাটির নিভু নিভু প্রদীপ,
আমি প্রদীপের তলানিতে অবশিষ্ট কেরোসিন,
আমি মিটি মিটি জ্বলা অগ্নিশিখা,
আমি নিভে যাই, নিবে যাব, নিভে যাচ্ছি,
হঠাৎ ধমকা হাওয়া আসে, আমি জ্বলে উঠি পূর্ণ দৈর্ঘ্যে,
পাখা ঝাপটাই হাওয়ার তালে।
আমি পাখা, আমিই পাখি।
আমি ক্লান্তি
আমি ক্লান্ত, বড্ড বেশী,
আমি মহাকালের দরজায় কড়া নেড়েছি,
—হে মহাকাল, দরজা খোল।
আমি হেঁটেছি অনেক পথ। এবার একটু বিশ্রাম নেবো,
কিছুক্ষণ, হয়তো কয়েক শতাব্দী।
একটু হেলান দেবো, ঈশ্বরের পিঠে,
মাথাটা রাখবো, ঈশ্বরের কোলে।